স্টাফ রিপোর্টারঃ
বিজ্ঞাপন দেখে কয়েক মাস আগে কেনা হয়েছিলো প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের ভিশন ব্রান্ডের এসি। পনের দিন আগেও সার্ভিসিং করা হয়েছিলো। এরপরও এই ভিশন ব্রান্ডের এসিতে বিস্ফোরণের ঘটনায় একই পরিবারের চারজন দগ্ধ হয়েছে। এরপর দেশজুড়ে এই ব্রান্ডের ব্যাবহারকারীদের মধ্যে বিষ্ফোরণ আতঙ্ক বিরাজ করছে। শুক্রবার (১৯ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে রাজধানীর যাত্রাবাড়ীর ধলপুরের বউবাজার এলাকায় এই দুর্ঘটনা ঘটে। এখন দগ্ধ চারজন হাসপাতালে মৃত্যুশয্যায়।
জানা যায়, অগ্নিদগ্ধ তুহিন হোসেন ও তাঁর স্ত্রী ইভা আক্তার দুই সন্তানকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন। হঠাৎ এসি বিস্ফোরিত হয়ে ঘরে আগুন ধরে যায়। এতে দগ্ধরা হন মো. তুহিন হোসেন (৩৮), তাঁর স্ত্রী ইবা আক্তার (৩০) এবং দুই সন্তান তাওহীদ (৭) ও তানভীর (৯)। দগ্ধদের রাতেই প্রতিবেশী ভাড়াটিয়ারা উদ্ধার করে জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করেন। বর্তমানে চারজনের অবস্থাই আশঙ্কাজনক বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
জানা গেছে, তুহিন হোসেন রাজধানীর মতিঝিলের মোতালেব প্লাজায় একটি মোবাইল সার্ভিসিং দোকানে কাজ করেন। তাদের বাড়ি মাদারীপুর সদর উপজেলায়।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগীর ভাই জানান, এসিটা মধ্যরাতে বোমের মতো বিস্ফোরণ হয়। এরপরে সারাঘরে আগুন ধরে যায়। তিনি আরও জানান, এসিটি ১৫ দিন আগেও সার্ভিসিং করা হয়েছিল। তারপরেও এই দুর্ঘটনা ঘটায় বিষয়টি খতিয়ে দেখার অনুরোধ করেন তিনি। পরিবারের সদস্যদের একজন অভিযোগ করে বলেন, ভিশন ব্রান্ডের এসি বিস্ফোরণ হয়েছে, এদের পণ্য ঝুঁকিপূর্ণ, বিষয়টি গণমাধ্যমে ঠিকমত প্রকাশ হচ্ছে না। অভিযোগ মতে, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ তাদের বিপদজনক এসির কারণে অগ্নিকান্ডে হতাহতে কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারে না উল্লেখ করা হয়।
তথ্যমতে, বিস্ফোরিত হওয়া এসিটি দেশের অন্যতম বৃহৎ আরএফএল গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান ‘ভিশন ইলেকট্রনিকস’ এর ‘ভিশন’ ব্রান্ডের এসি। বিজ্ঞাপনে এই এসির গুনাগুণ নিয়ে যে বর্ণনা দেওয়া হয় বাস্তবে ভয়ানক মৃত্যঝুঁকি সৃষ্টি হওয়ায় সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে ক্ষোভও আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এই ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে বিরুপ মন্তব্য সৃষ্টি হয়। ভুক্তভোগি পরিবারের দাবি, বাজার থেকে এধরনের নিম্নমানের এসি তুলে নেয়া উচিৎ ।
ভিশন ব্রান্ডের এসি বিস্ফোরণ এবং হতাহতের বিষয়ে জানতে চাইলে, আরএফএল গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর আরএন পাল বলেন, এসির অবস্থা দেখে আমাদের মনে হয়েছে এটা বিষ্ফোরিত হয়নি। বিষ্ফোরণ হলে এসির ইনডোরের অবস্থা এমন থাকতো না। তিনি বলেন, এখান থেকে অগ্নিকান্ডের সূত্রপাত হতে পারে, বিষ্ফোরণ নয়।