বর্তমানদিন ডেস্ক:
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক ঘোষিত শরিয়াহভিত্তিক ব্যাংকগুলোর একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আপত্তি জানিয়েছে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি। সম্প্রতি ব্যাংকটির চারজন সাবেক এনআরবি (নন-রেসিডেন্ট বাংলাদেশি) পরিচালক এবং এনআরবি স্পন্সর শেয়ারহোল্ডারসহ মোট পাঁচজন শেয়ারহোল্ডার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর বরাবর একটি পত্র পাঠিয়ে এ অসম্মতি প্রকাশ করেছেন।
এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে ব্যাংকটি এই আপত্তির কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানায়। তাদের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, এই একীভূতকরণের সিদ্ধান্ত ব্যাংকটির শেয়ারহোল্ডারদের স্বার্থ এবং ব্যাংকের স্থিতিশীলতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের মতে, ব্যাংকটি বর্তমানে একটি স্থিতিশীল আর্থিক অবস্থানে রয়েছে। তাদের দাবি, গত কয়েক বছর ধরে ব্যাংকটি মুনাফা অর্জন করছে এবং এর আর্থিক সূচকগুলোও বেশ শক্তিশালী। এমন পরিস্থিতিতে একটি দুর্বল ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হলে তাদের আর্থিক ভিত্তি দুর্বল হয়ে পড়বে, যা আমানতকারী এবং বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি করতে পারে।
সংশ্লিষ্টদের মতে, বাংলাদেশ ব্যাংক সম্প্রতি দুর্বল ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার একটি উদ্যোগ নিয়েছে। এই প্রক্রিয়ায় প্রথম ধাপে শরিয়াহভিত্তিক পাঁচটি ব্যাংককে একীভূত করার কথা ছিল, যার মধ্যে গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকও ছিল। কিন্তু ব্যাংকটির পক্ষ থেকে এমন আপত্তির পর এই প্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া এখনো পাওয়া যায়নি। তবে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতি অনুযায়ী, দেশের ব্যাংকিং খাতের শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে এবং দুর্বল ব্যাংকগুলোকে রক্ষা করতে এই ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের এই আপত্তির পর বাংলাদেশ ব্যাংক কী ধরনের পদক্ষেপ নেয়।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ব্যাংকের শেয়ারহোল্ডারদের এমন সরাসরি আপত্তির ঘটনা ব্যাংকিং খাতের একীভূতকরণ প্রক্রিয়ায় একটি নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি ভবিষ্যতে অন্যান্য ব্যাংকগুলোর ক্ষেত্রেও একীভূতকরণের সিদ্ধান্তকে প্রভাবিত করতে পারে। এই প্রক্রিয়া আদৌ কতটা সফল হবে, তা এখন অনেকটাই নির্ভর করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পরবর্তী পদক্ষেপের ওপর।