মাদারীপুরে জাকির কাজী নামে এক ব্যক্তির কর্মকান্ডে আতঙ্কিত ঘটকচর ও দত্তেরহাট এলাকার সাধারণ মানুষ। ডাকাতি, সন্ত্রাস, বিস্ফোরণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে আহত করার মত একাধিক মামলা হওয়ার এই আসামি এখন ফের আলোচনায়। মামলাগুলোর মধ্যে কয়েকটি নিষ্পত্তি হলেও বাকি মামলায় রয়েছেন জামিনে। অভিযুক্ত জাকির কাজী সদর উপজেলার কেন্দুয়া ইউনিয়নের দত্তেরহাট গ্রামের মৃত হাশেম কাজীর ছেলে।
জানা যায়, জাকির কাজী কর্মকান্ড নিষিদ্ধ আওয়ামী লীগের নেতাদের সাথে আঁতাত করে গত ১৫ বছর এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব করে আসছিল বলে এলাকার অনেকের অভিযোগ। তার এই কর্মকান্ডের কারনে সদর মডেল থানায় সন্ত্রাস, বিস্ফোরণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে আহত করার মত একাধিক মামলা হয়। কালকিনি থানায় হয় ডাকাতি মামলা। এমন মামলায় কারাগারও ভোগ করেছিলেন তিনি। কয়েকটি মামলায় আইনের ফাঁকফোকর দিয়ে বেড়িয়ে গেলেও বর্তমানে জামিনে রয়েছেন জাকির। আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর জাকির কাজী এখন বিএনপি নেতাদের সাথে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি করছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন রয়েছে। এরপর অসহায় মানুষের সাথে শুরু করেন অত্যাচার ও নির্যাতন। খুঁটিনাটি বিষয় নিয়ে সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। হত্যার হুমকিও দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জাকিরের আতঙ্কে মুখ খুলতেও অনেকে ভয় পাচ্ছেন।
সবশেষ গত ২২ ডিসেম্বর বিকেলে সদর উপজেলার ঘটকচর এলাকার তারক মাতুব্বরের ছেলে ইদ্রিস মাতুব্বর সদর মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে তিনি অভিযোগ করেন, জাকির কাজী পূর্ব শত্রুতার জের ধরে উত্তর কাউয়াকড়ি এলাকায় গত ২১ ডিসেম্বর বিকেলে ৫টার দিকে একা পেয়ে ইদ্রিস মাতুব্বরকে কুপিয়ে হত্যার হুমকি দেন। পরে প্রাণনাশের আশঙ্কায় থানায় জিডি করেন তিনি।
নাম না প্রকাশ্যে স্থানীয়রা জানান, ডাকাতি, সন্ত্রাস, বিস্ফোরণ ও হত্যার উদ্দেশ্যে কুপিয়ে আহত করার মত একাধিক মামলার এই আসামি প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ানোতে সাধারণ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বর্তমানে থানায় পুলিশ বাদীও মামলা রয়েছে জাকিরের বিরুদ্ধে। তার সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের কারনে বাহিরে চলাফেরা করাটা কঠিন হয়েছে। তার বিরুদ্ধে দ্রুত আইনী পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানান ভুক্তভোগীরা।
ভুক্তভোগী ইদ্রিস মাতুব্বর বলেন, ‘আমার মামা দুলাল মাতুব্বরকে এলাপাতাড়ি কুপিয়েছে জখম করেছে জাকির কাজী ও তার লোকজন। পরে মামার পা কেটে বিচ্ছিন্ন করে নিয়ে যায় তারা। সেই ঘটনায় মামলা হয়। এই জেরে আমার ওপর ফের হামলা চালানোর পায়তারা করছে। এরইমধ্যে হুমকিও দিয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই। তার কর্মকান্ডে অতিষ্ঠ এলাকার লোকজন।’
এ ব্যাপারে জাকির কাজী বলেন, ‘আমার নামে পূর্বে অনেক মামলা ছিল। সেগুলো নিষ্পত্তি হয়েছে। এখন কোন মামলা নেই। বর্তমানে আমি এলাকার কাউকেই কোন ভয়ভীতি দেখাইনি।’ মাদারীপুর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘ইদ্রিস মাতুব্বরের সাধারণ ডায়েরি করার ঘটনায় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। দোষ পাওয়া গেলে জাকির কাজীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।’