খুলনা ডেস্ক:
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশকে নতুন করে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ঋণ অনুমোদন করেছে, যা বাংলাদেশী মুদ্রায় প্রায় ৬ হাজার ১১৮ কোটি টাকা সমান। এই ঋণের মূল লক্ষ্য দেশের সরকারি খাতের স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা এবং আর্থিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধি করা। অর্থায়নটি সরকারকে শাসনব্যবস্থা শক্তিশালীকরণ, প্রাতিষ্ঠানিক স্থিতিশীলতা উন্নয়ন এবং টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে সহায়তা করবে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর গেইল মার্টিন বলেন, সরকার তাদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে আরও উন্মুক্ত এবং জবাবদিহিতামূলক করার জন্য উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ নিচ্ছে, যার মাধ্যমে জনগণকে উন্নত সেবা দেওয়া সম্ভব হবে। এই ঋণ নীতিমালা ও নিয়ন্ত্রক কাঠামো শক্তিশালী করে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ে তোলার প্রচেষ্টাকে সহায়তা করবে।
বর্তমানে বাংলাদেশের রাজস্ব-জিডিপি অনুপাত মধ্যম আয়ের দেশগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কম, যা মানসম্পন্ন সেবা প্রদানে সরকারের সক্ষমতা সীমিত করে। বিশ্বব্যাংকের এই ঋণ কর্মসূচি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ উন্নয়নের জন্য কর প্রশাসন এবং নীতি নির্ধারণকে আরও স্বচ্ছ ও দক্ষ করার লক্ষ্যে বাস্তবায়িত হবে। এছাড়াও কর ছাড়ের ক্ষেত্রে সংসদীয় অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে আরও কৌশলগত ও নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে।
বিশ্বব্যাংকের সিনিয়র অর্থনীতিবিদ ধ্রুব শর্মা জানান, এই অর্থায়ন স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে নিবিড়ভাবে সংযুক্ত। এটি অভ্যন্তরীণ রাজস্ব সংগ্রহ, আর্থিক খাতের স্থিতিশীলতা, শাসনব্যবস্থা ও সরকারি খাতের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। তথ্য ব্যবস্থার উন্নতির মাধ্যমে সরকারি সম্পদ দরিদ্র ও ঝুঁকিপূর্ণ পরিবারের কাছে পৌঁছানোর ক্ষেত্রে আরও কার্যকর ভূমিকা পালন করবে, বিশেষ করে অর্থনৈতিক ও প্রাকৃতিক সংকটের সময়ে।
এর আগে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) বাংলাদেশকে চারটি প্রকল্পের জন্য ১৩০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে, যার বাংলাদেশী মুদ্রায় মূল্য প্রায় ১৫ হাজার ৮৮৮ কোটি টাকা। চলতি অর্থবছরে বিশ্বব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশে মোট নতুন ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ৩০৭ কোটি মার্কিন ডলার। স্বাধীনতার পর থেকে বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের জন্য ৪৬ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি অনুদান, সুদমুক্ত ও ছাড়মূলক ঋণের প্রতিশ্রুতি প্রদান করেছে, যা দেশের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে।
উন্নয়ন সহযোগীদের এই ঋণ ও অর্থায়ন বৃদ্ধির মাধ্যমে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা, সরকারি কার্যক্রমের স্বচ্ছতা এবং উন্নত সেবা প্রদানের লক্ষ্য পূরণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি আশা করা যাচ্ছে।