রবিবার, মে ৫, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * বিশ্ব মুক্ত গণমাধ্যম সূচক দুই ধাপ পিছিয়ে বাংলাদেশ ১৬৫তম, শুধু আফগানিস্তানের চেয়ে এগিয়ে   * চাইল্ড অ্যান্ড ওল্ড এইজ কেয়ারের মিল্টন সমাদ্দার ডিবির জালে   * সর্বাঙ্গের ব্যথায়, মলম দিবে কোথায়, গ্যাড়াকল চালকরা এখনো ভবানিপুরের খোঁজে-১   * শ্রমিক ঠকলে কাউকে ছাড় নাই: প্রধানমন্ত্রী   * গরমে নাজেহাল রাজধানীবাসী, কষ্টে শ্রমজীবী মানুষ   * থাইল্যান্ড সফর শেষে দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী   * কারা ফুটপাত বিক্রির সঙ্গে জড়িত তালিকা চেয়েছেন হাইকোর্ট   * সংগীত শিল্পীর মাদকের কারবার!   * সাবেক আইজি বেনজীরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে রিট   * গত ১৫ বছরে দেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন হয়েছে : ওবায়দুল কাদের  

   সম্পাদকীয়
কিশোরগ্যাংয়ের উত্থান ও আমাদের ভবিষ্যত
  Date : 05-11-2023
Share Button

মোঃ আসাদুজ্জামান আসাদ:

কিশোর কালকে জীবনের সবচেয়ে টার্নিং পয়েন্ট হিসেবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ আজ এই কিশোররাই সমাজে কিশোরগ্যাং হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে। বর্তমানে কিশোরগ্যাং নামক বিষয়টি আপাময় সাধারণ অভিভাবক ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর রীতিমত দুশ্চিন্তার কারণ হিসেবে দাড়িয়েছে। আমাদের কিশোরদের এই বিপথগামীতায় আসলে কোন কোন বিষয়গুলো দায়ী? কিশোরেরা স্বাস্থ্য বিজ্ঞানের ভাষায় অপ্রাপ্তবয়স্ক হলেও তারা প্রায়শই এমন কাজ করে বসে যে তাদের দুঃসাহসীএহেনকর্মকান্ডেরজন্য রীতিমত স্তম্ভিত হতেহয়। কিশোরগ্যাং নামক বিষয়টি এক দশক আগেও তেমন আলোচনায় ছিলনা । বর্তমানে এ সমস্যাটি প্রকট আকার ধারন করেছে এবং প্রত্যেকটি পরিবার তাদের সন্তানদের নিয়ে অত্যন্ত চিন্তাগ্রস্থ অবস্থায় দিনাতিপাত করছে।

কিশোরগ্যাং এর প্রচলন বা উত্থান কিভাবে হলো তা নিয়ে প্রখ্যাত একজন কিশোর অপরাধ বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলে জানা যায় আমাদের সন্তানদের কিশোরগ্যাংদের সাথে সংশিষ্ট হওয়ার নানাবিধ কারণ জড়িত রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে উল্লেখ যোগ্য কারণগুলো হচ্ছে অভিভাবক হিসেবে সন্তানদের সময় কম দেওয়া, তাদের অভাব-অভিযোগ এ গুরুত্ব না দেওয়া, তাদের বন্ধুবান্ধবদের ব্যাপারে খোঁজ খবর না রাখা, নিয়মিত পড়াশুনার তদারকির অভাব, ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলার ব্যাপারে উদাসীনতা এবং সর্বোপরি ভিনদেশী সংস্কৃতির আগ্রাসন থেকে সন্তানদের আসক্তি না কমাতে পারা ইত্যাদি।

এক সরেজমিনে দেখা যায়, গত করোনা মহামারির সময়ে স্কুল কলেজ বন্ধ থাকার কারণে আমাদের সন্তানেরা বেশি সময় আলস্যে কাটানো, মোবাইল স্ক্রিন আসক্তি, ভিডিও গেমস, ঘরের বাইরে বিনা প্রয়োজনে বন্ধু-বান্ধবদের সাথে সময় কাটানো, রুটিন অনুযায়ী কাজ করার অনভ্যাস ইত্যাদি মূলতঃ আমাদের সন্তানদের কিশোরগ্যাং হওয়ার পথ সহজকরে দিয়েছে। বর্তমানে অধিকাংশ অভিভাবক একটি সাধারণ অভিযোগ হচ্ছে আমার সন্তান কোন কথা শুনেনা, সে দিনদিন খারাপ হয়ে যাচ্ছে। বন্ধু-বান্ধবদের সাথে অযথা এবং অসময়ে সময় ক্ষেপণ করতে বেশি পছন্দ করে। তাদের মতে রবিরুদ্ধে গেলেই নানা রকম অসংগতিমূলক আচরণ শুরু করে। বর্তমান কিশোর বয়সীরা দলবেধে চলতে বাগ্রুপিং করতে বেশি দেখা যায় এবং তারা সংঘবদ্ধভাবে অপরাধমুলক কাজগুলোই বেশি সংঘটিত করছে। মুরুব্বি বা বয়োজ্যেষ্ঠদের সম্মান করা এবং ছোটদের স্নেহকরা , আদবকায়দা মেনে চলা , বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক রেখে আচরণ করা ইত্যাদি যেন বর্তমান অভিভাবক শ্রেণির অত্যন্ত কাঙ্খিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে যা পূর্বে সবার কাছে এ বিষয়গুলো অত্যন্ত স্বাভাবিক ছিল। কিশোরগ্যাং এর সদস্য হয়ে তারা অত্যন্ত বেপরোয়া আচরণ করে এবং আত্মপরিচয় ভূলে গিয়ে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে অপরাধমূলক কর্মকান্ড করে।

এহেন পরিস্থিতিতে সমাজের প্রতিটি স্তরের মানুষ সচেতন না হলে এবং সজাগ দৃষ্টি না রাখলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম অত্যন্ত ভয়ানক পরিস্থিতির দিকে পতিত হবে। বর্তমান প্রজন্ম খারাপের দিকে ধাবিত হলে আমরা আমাদের দেশের ভবিষ্যত কার হাতে সামনের দিকে এগিয়ে যাবে? বিশ্ব যেখানে দিনদিন প্রযুক্তি নির্ভর হয়ে আরও গতিশীল হচ্ছে সেখানে আমাদের সন্তানরা যদি ভূল পথে পা বাড়ায় তাহলে একদিন আমাদের এ জন্য চরম মূল্য দিতেহবে এবং আমরা একদিন ভাল নেতৃত্বের অভাবে বিশ্ব দরবারে আমাদের ভাবমূর্তি মারাত্নকভাবে ক্ষুন্ন হবে।

কিশোররা আমাদের ভবিষ্যত, আমরা অভিভাবক হিসেবে সন্তানদের আরও বেশি সময় দিব এবং তাদের মেধা ও মনন বিকাশে সাধ্যমত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব। কিশোর অপরাধীদের সংশোধনের জন্য সরকারের বিবিধ ব্যবস্থার আরও সংস্কার প্রয়োজন। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে কিশোরদের যথেচ্ছ ব্যবহার অত্যš Íসচেতনভাবে কমাতে হবে যাতে দেশের ভবিষ্যতে যোগ্য নেতৃত্ব তৈরী হতে কোন ধরনের নেতিবাচক প্রভাব কাজ না করে। কিশোরদের মাঝে মানবিক মূল্যবোধ জাগ্রত করতে পারলে তারা সত্যিই খাঁটি সোনা হিসেবে গড়ে উঠবে এবং নিজের দেশের জন্য একজন সত্যিকার দেশ-প্রেমিক হিসেবে দেশের সামগ্রিক কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত রাখতে পারবে।

কিশোরগ্যাং তৎপরতা অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে নিয়ে বর্তমান ঢাকা দক্ষিণ সিটিকর্পোরেশন মেয়র জনাব ফজলে নূর তাপস সিটিকর্পোরেশনের প্রতিটি ওয়ার্ডে একটি করে খেলার মাঠ তৈরীর ঘোষণা দিয়েছেন যাতে করে আমাদের কিশোর বয়সী সন্তানেরা নিয়মিতভাবে খেলাধূলা করার সুযোগ লাভ করে তাদের শারিরীক ও মানসিক বিকাশ সাধন করতে পারে। মাদকের বিস্তার রোধ, পড়াশুনার সঠিক পরিবেশ তৈরী করে দেয়া, তাদের অভাব-অভিযোগ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে শুনে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা, আচার-আচরণে অনাকাঙ্খিত পরিবর্তন আসলে মনোবিজ্ঞানীদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ গ্রহণ করা, অভিভাবকদের নিয়মিতভাবে সন্তানদের যাবতীয় বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখা ইত্যাদি কাজগুলো নিয়মিতভাবে তদারকিকরলে আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদের স্বপ্নের চেয়ে আরও সুন্দরভাবে বেড়ে উঠবে এবং দেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।
                                                                         মো: আসাদুজ্জামাস আসাদ, কলাম লেখক; প্রিন্সিপাল- ইম্পেরিয়াল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজ।



  
  সর্বশেষ
শিক্ষামন্ত্রীকে লিগ্যাল নোটিশ
সর্বাঙ্গের ব্যথায়, মলম দিবে কোথায়, গ্যাড়াকল চালকরা এখনো ভবানিপুরের খোঁজে-১
সংগীত শিল্পীর মাদকের কারবার!
সেই শিশু পর্নোগ্রাফার টিপু এবার ডিবির জালে

প্রধান সম্পাদক: এনায়েত ফেরদৌস , অনলাইন সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত ) কামরুজ্জামান মিল্টন |
নির্বাহী সম্পাদক: এস এম আবুল হাসান
সম্পাদক জাকির হোসেন কর্তৃক ২ আরকে মিশন রোড ঢাকা ১২০৩ থেকে প্রকাশিত ও বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল ঢাকা ১০০০ থেকে মুদ্রিত। সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ২/২, ইডেন কমপ্লেক্স (৪র্থ তলা) সার্কুলার রোড, ঢাকা ১০০০। ফোন: ০১৭২৭২০৮১৩৮, ০১৪০২০৩৮১৮৭ , ০১৫৫৮০১১২৭৫, ই-মেইল:bortomandin@gmail.com