খুলনা ডেস্ক:
তেহরানে হাজারো শোকাহত মানুষের উপস্থিতিতে ইসরায়েল-ইরান সাম্প্রতিক সংঘর্ষে নিহত শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা, পরমাণু বিজ্ঞানী, সাংবাদিক ও সাধারণ নাগরিকদের রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে আয়োজিত এই বিশাল শেষকৃত্যানুষ্ঠানে জাতীয় পতাকায় মোড়ানো কফিন ঘিরে আবেগঘন পরিবেশ তৈরি হয়। ইরানি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আইআরআইবি সরাসরি অনুষ্ঠান সম্প্রচার করে, যেখানে দেখা যায় মানুষ কফিনগুলোর দিকে ছুটে যাচ্ছে, বাজছে দেশপ্রেমমূলক সঙ্গীত।
জানাজায় ইরানের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ানসহ নিরাপত্তা বাহিনীর শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। মঞ্চে প্রদর্শিত হয় ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর প্রধান মেজর জেনারেল হোসেইন সালামি ও সশস্ত্র বাহিনীর চিফ অব স্টাফ জেনারেল মোহাম্মদ বাঘেরিসহ নিহত শীর্ষ ব্যক্তিদের ছবি। জনতার অনেকেই আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির ছবি বহন করেন এবং আমেরিকা ও ইসরায়েলবিরোধী স্লোগান দেন বলে জানিয়েছে তাসনিম নিউজ এজেন্সি।
গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের বিভিন্ন পারমাণবিক, সামরিক ও আবাসিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়, যাতে প্রাণ হারান ৬০০-রও বেশি মানুষ। নিহতদের মধ্যে ছিলেন দেশের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক নেতৃত্ব, বিজ্ঞানী এবং অসংখ্য নিরীহ নারী-শিশু। পাল্টা প্রতিক্রিয়ায় ইরান শুরু করে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস–৩’। ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর মহাকাশ শাখার নেতৃত্বে চালানো হয় ২২টি পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা, যাতে ইসরায়েলেও ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
এই সংঘর্ষ শেষে ২৪ জুন দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং পরিস্থিতি আপাতত স্থিতিশীল হয়। তবে জানাজার এই দৃশ্য প্রমাণ করে—এই সংঘাত ইরানিদের হৃদয়ে কী গভীর ক্ষত তৈরি করেছে। ইরানের জনগণের ঐক্য ও শোকাবেগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।