খুলনা ডেস্ক:
বাংলাদেশের আপিল বিভাগ এক গুরুত্বপূর্ণ আদেশে নিম্ন আদালতের বিচারকদের জন্য প্রণীত শৃঙ্খলা বিধি অনুমোদনের পূর্ববর্তী আদেশ স্থগিত করেছে। একইসঙ্গে আপিলের জন্য অনুমতিও দেওয়া হয়েছে। রোববার, ২৯ জুন ২০২৫ সকালে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের নেতৃত্বাধীন ছয় সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই আদেশ প্রদান করেন।
এই বেঞ্চে আরও ছিলেন বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম, বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী, বিচারপতি মো. রেজাউল হক, বিচারপতি এস এম এমদাদুল হক এবং বিচারপতি ফারাহ মাহবুব। আদালতে আবেদনকারীদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির ও মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান এবং ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. আসাদ উদ্দিন।
আইনজীবী শিশির মনির জানান, আদালতের এই আদেশের ফলে সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ ঘিরে চলমান হাইকোর্টের রিটের নিষ্পত্তিতে আর কোনো আইনি বাধা রইল না। তিনি আরও উল্লেখ করেন, তৎকালীন সরকার বিচার বিভাগকে ব্যবহার করে যে শৃঙ্খলা বিধিমালা গৃহীত করেছিল, তা নজিরবিহীন। তাই রিভিউ আবেদনটি করা হয়েছিল সর্বোচ্চ আদালতের অনুমতি নিয়ে।
এর আগে, ২৬ জুন ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি মো. আবদুল ওয়াহ্হাব মিঞার নেতৃত্বাধীন একটি পাঁচ সদস্যের বেঞ্চ এই শৃঙ্খলা বিধি গ্রহণের আদেশ দিয়েছিল। আজকের আপিল বিভাগের শুনানির মাধ্যমে সেই আদেশ স্থগিত করা হলো।
বিচার বিভাগ পৃথককরণ–সংক্রান্ত ঐতিহাসিক মাসদার হোসেন মামলার আলোকে ২০১৭ সালের ১১ ডিসেম্বর বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস (শৃঙ্খলা) বিধিমালা-২০১৭ প্রজ্ঞাপন আকারে প্রকাশিত হয়। এরপর ২০১৮ সালের ৩ জানুয়ারি আপিল বিভাগ তা অনুমোদন করে আদেশ দেন। কিন্তু এই আদেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন গত মাসে আইনজীবী শিশির মনিরসহ আটজন আইনজীবী তৃতীয় পক্ষ হিসেবে দায়ের করেন। সেই আবেদনের শুনানি শেষে আজ আদেশটি স্থগিত করা হলো।
মাসদার হোসেন মামলার রায়ে ১২টি নির্দেশনা দিয়ে বিচার বিভাগকে নির্বাহী বিভাগ থেকে পৃথক করার জন্য স্পষ্ট নির্দেশ দেওয়া হয়। এই রায়ের ধারাবাহিকতায় শৃঙ্খলা বিধি প্রণয়ন প্রক্রিয়া শুরু হলেও আইন মন্ত্রণালয়ের প্রণীত খসড়া ১৯৮৫ সালের সরকারি কর্মচারী বিধিমালার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় তা আদালতের দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য হয়।