খুলনা ডেস্ক:
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) শিক্ষক সমিতি ক্লাসে না ফেরার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে। সোমবার শিক্ষক সমিতির বৈঠকে পুনরায় জানানো হয়, শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি এবং দ্রুত নতুন উপাচার্য নিয়োগ না হলে কোনো ধরনের ক্লাস বা পরীক্ষা পরিচালনা করা হবে না। চার মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কার্যক্রম স্থগিত থাকায় চরম সেশনজটে পড়েছেন প্রায় সাড়ে সাত হাজার শিক্ষার্থী। বিশেষ করে চূড়ান্ত বর্ষের শিক্ষার্থীরা মারাত্মক অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছেন, যাঁদের উচ্চশিক্ষা বা চাকরিতে আবেদন প্রক্রিয়া থমকে আছে।
গত ১৮ ফেব্রুয়ারির ছাত্র সংঘর্ষ এবং শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনার পর পরিস্থিতি দ্রুত অবনতির দিকে যায়। আন্দোলনের মুখে ২৫ এপ্রিল তৎকালীন উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যকে অব্যাহতি দেয় শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে ১ মে চুয়েটের অধ্যাপক মো. হযরত আলীকে কুয়েটের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হলেও তিনিও শিক্ষক আন্দোলনের চাপের মুখে ২২ মে পদত্যাগ করেন। এরপর থেকে কুয়েটের উপাচার্য ও উপ-উপাচার্যের পদ শূন্য রয়েছে, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কাঠামোকে আরও দুর্বল করে তুলেছে।
শিক্ষার্থীরা একাধিকবার শিক্ষক নেতাদের কাছে প্রকাশ্যে দুঃখ প্রকাশ করলেও এখনও শিক্ষা কার্যক্রমে কোনো অগ্রগতি হয়নি। শিক্ষার্থীরা জানান, তারা বারবার ক্ষমা চেয়েছেন এবং শিক্ষকদের প্রতি সম্মান জানিয়ে ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানিয়েছেন। কিন্তু শিক্ষক সমিতি তাদের অবস্থানে অনড় থেকে শিক্ষা কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না। এই অবস্থায় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করে চলেছেন।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের পক্ষ থেকেও শিক্ষক সমিতিকে পাঠদান ও পরীক্ষা চালু করার আহ্বান জানানো হয়েছে। তবুও শিক্ষকরা জানিয়েছেন, লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তির নিশ্চয়তা ছাড়া তারা শ্রেণিকক্ষে ফিরবেন না। শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মো. ফারুক হোসেন জানান, নতুন উপাচার্য নিয়োগ হলে তার কাছে দাবি উপস্থাপন করা হবে, তবে ততদিন ক্লাস বা পরীক্ষা হবে না।
এই দীর্ঘ অচলাবস্থার কারণে দেশের অন্যতম শীর্ষ প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে এগিয়ে থাকা কুয়েট এখন পিছিয়ে পড়ছে। শিক্ষার্থীদের শিক্ষা জীবন ও ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় ধরনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে।