খুলনা ডেস্ক:
দিয়োগো জোতা, লিভারপুলের ২৮ বছর বয়সী পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড, স্পেনে একটি ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। একই ঘটনায় মারা গেছেন তাঁর ছোট ভাই, ২৬ বছর বয়সী আন্দ্রে সিলভাও, যিনি পর্তুগালের দ্বিতীয় বিভাগের ক্লাব পেনাফিয়েলের ফুটবলার ছিলেন। স্পেনের জামোরা প্রদেশের এ-৫২ মহাসড়কে গত রাতে তাঁদের গাড়িটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ছিটকে পড়ে এবং তৎক্ষণাৎ আগুন ধরে যায়। স্থানীয় অগ্নিনির্বাপণ বাহিনী ঘটনাস্থলে গিয়ে দুজনকেই মৃত অবস্থায় উদ্ধার করে।
জোতা মাত্র দুই সপ্তাহ আগে, ২২ জুন, তাঁর দীর্ঘদিনের প্রেমিকা রুতে কারদোসোকে বিয়ে করেন। দম্পতির রয়েছে তিন সন্তান। সামাজিক মাধ্যমে বিয়ের মুহূর্তগুলো শেয়ার করার মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই আসে এই হৃদয়বিদারক সংবাদ।
স্থানীয় পুলিশ দুর্ঘটনার তথ্য নিশ্চিত করলেও নিহতদের নাম আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেনি। তবে পর্তুগিজ এবং আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন, অগ্নিনির্বাপণ বিভাগের বিবৃতি এবং পরিবারঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে জানা যায়, নিহতরা দিয়োগো জোতা ও তাঁর ভাই আন্দ্রে সিলভা।
জোতা ২০১৪ সালে পাকোস দে ফেরেইরার হয়ে পেশাদার ফুটবলে অভিষেক করেন। এরপর আতলেতিকো মাদ্রিদ, পোর্তো ও উলভারহ্যাম্পটন হয়ে ২০২০ সালে ৪ কোটি ১০ লাখ পাউন্ডে যোগ দেন লিভারপুলে। ক্লাবটির হয়ে ১৮২ ম্যাচে ৬৫ গোল করেন তিনি। জাতীয় দলের হয়ে ৪৯ ম্যাচে ১৪ গোল রয়েছে তাঁর নামের পাশে। চোটের কারণে ২০২২ সালের বিশ্বকাপে খেলতে না পারলেও ইউরো ২০২৪-এ অংশ নেন তিনটি ম্যাচে।
খেলাধুলার বাইরেও ভিডিও গেমের প্রতি গভীর আগ্রহ ছিল জোতার। ২০২১ সালে ফিফা ২১ ভিডিও গেমে বিশ্বের সেরা গেমার হিসেবে র্যাংকিংয়ে ১ নম্বর স্থান অধিকার করেছিলেন। নিজের একটি ই-স্পোর্টস দলও প্রতিষ্ঠা করেন তিনি।
দুই ফুটবলারের অকাল মৃত্যুতে শোকাচ্ছন্ন ফুটবলবিশ্ব। পর্তুগিজ ফুটবল ফেডারেশন থেকে এক বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, জোতা শুধু অসাধারণ এক ফুটবলার ছিলেন না, ছিলেন একজন মানবিক এবং সম্মানিত সহযোদ্ধাও। একইসঙ্গে ফেডারেশন জানিয়েছে, দুই ভাইয়ের লিগ্যাসি বাঁচিয়ে রাখতে যা যা প্রয়োজন, সব কিছুই তারা করবে।
লিভারপুল ফুটবল ক্লাব এবং পোর্তো ক্লাব থেকেও দেওয়া হয়েছে গভীর শোকবার্তা। উয়েফার মেয়েদের ইউরো টুর্নামেন্টে আজকের পর্তুগাল-স্পেন ম্যাচ শুরুর আগে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হবে তাঁদের স্মরণে।
দিয়োগো জোতা ও তাঁর ভাই আন্দ্রে সিলভার এভাবে চলে যাওয়া পর্তুগিজ ফুটবলের জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি। তাঁদের স্মৃতি বেঁচে থাকবে ভক্ত, সতীর্থ ও ফুটবল ইতিহাসে।