খুলনা ডেস্ক:
যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলায় অ্যাসিড নিক্ষেপ মামলার প্রধান আসামি মো. জসীম উদ্দিনকে অবশেষে পুলিশের বুদ্ধিমত্তাপূর্ণ অভিযানে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তি দীর্ঘদিন ধরে পলাতক ছিলেন এবং শেষমেশ নড়াইল জেলার লোহাগাড়া উপজেলার আমাদাহ বিল এলাকায় জেলের ছদ্মবেশে লুকিয়ে ছিলেন।
ঘটনাটি ঘটে ৩ জুলাই রাতে, যখন পূর্ব শত্রুতার জেরে জসীম উদ্দিন প্রতিবেশী জামাত হোসেনের বাড়ির জানালা দিয়ে অ্যাসিড নিক্ষেপ করেন। এতে জামাত হোসেনের স্ত্রী রাহেলা খাতুন (৪৫), কন্যা রিপা খাতুন (২৫) এবং আট বছর বয়সী শিশু ইয়ানুর রহমান গুরুতর দগ্ধ হন। তাদের তাৎক্ষণিক যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, অভিযুক্ত জসীম দীর্ঘদিন ফজলুর রহমানের কেয়ারটেকার হিসেবে কাজ করতেন এবং ভুক্তভোগী রিপাকে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে আসছিলেন। কিন্তু প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় ক্ষিপ্ত হয়ে এই ভয়াবহ হামলা চালান তিনি।
মামলার তদন্তে দায়িত্বপ্রাপ্ত এসআই তাপস গোপন সূত্রে জানতে পারেন, জসীম আমাদাহ বিলের মাঝে আত্মগোপনে আছেন। জেলে সেজে পুলিশের একটি দল বিলের ভেতরে পৌঁছে যায়। অভিযুক্ত ব্যক্তি পুলিশের ছদ্মবেশ বুঝে ফেললে পালানোর জন্য পানিতে ঝাঁপ দেন। তবে এসআই তাপসও সঙ্গে সঙ্গে পানিতে ঝাঁপ দিয়ে ধস্তাধস্তির পর তাকে গ্রেপ্তার করেন।
গ্রেপ্তারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জসীম ঘটনার দায় স্বীকার করেন। ১৮ জুলাই আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
এই ঘটনা পুলিশি বুদ্ধিমত্তা, ধৈর্য এবং সাহসিকতার এক অনন্য উদাহরণ হয়ে উঠেছে। স্থানীয়দের প্রশংসা কুড়িয়েছে পুলিশের এই পরিকল্পিত অভিযান এবং দ্রুত গ্রেপ্তার নিশ্চিত করায় ভুক্তভোগী পরিবার কিছুটা হলেও স্বস্তি পেয়েছে।
এই ধরনের অপরাধ দমনে পুলিশের উদ্যোগ এবং প্রযুক্তিনির্ভর তদন্ত ভবিষ্যতের জন্য একটি ইতিবাচক বার্তা বহন করে।