খুলনা ডেস্ক:
খুলনার শিরোমনি এলাকায় ইসলামী ব্যাংকের এজেন্ট ব্যাংকিং শাখা মেসার্স হাজারী এন্টারপ্রাইজের গ্রাহকরা এখনও ফেরত পাননি তাদের আত্মসাৎ হওয়া টাকা। ৭ জুলাই ওই শাখার ক্যাশ ইনচার্জ কাগজী মাহাবুবুর রহমান ও মার্কেটিং অফিসার মনিরুল গাজী গ্রাহকের কয়েক কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ ওঠে। সাত দিন পার হলেও কোনো গ্রাহক এখনো তাদের আমানতের অর্থ ফেরত পাননি, যা স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের জন্ম দিয়েছে।
এজেন্ট ব্যাংকিং সেবা ২০২০ সালের সেপ্টেম্বর মাসে শুরু করেন এ এইচ এম শফিউল্লাহ নামের একজন ব্যক্তি, যিনি স্থানীয়ভাবে জামায়াত সমর্থক হিসেবে পরিচিত। কাগজী মাহাবুবুর রহমান ও মনিরুল গাজী শুরু থেকেই এ শাখায় দায়িত্ব পালন করছিলেন। অভিযোগ রয়েছে, তারাও জামায়াত সংশ্লিষ্ট রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। জুলাইয়ের শুরু থেকেই মাহাবুব অফিসে অনুপস্থিত থাকেন এবং ৭ জুলাইয়ের পর থেকে মনিরুলকেও আর দেখা যায়নি। গ্রাহকরা পরে জানতে পারেন, তাদের জমাকৃত অর্থ মূল ব্যাংকে জমা না দিয়ে আত্মসাৎ করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে রয়েছেন দিনমজুর আকরাম গাজী, যার ছেলে মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, চার বছর ধরে জমা দেওয়া ৭৭ হাজার টাকার বিপরীতে ব্যাংকে গিয়ে দেখা যায় মাত্র ১ হাজার টাকা রয়েছে। এজেন্ট শাখার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দিলেও কার্যত কিছুই করা হয়নি।
স্থানীয় বিএনপি ও জামায়াত নেতারাও তাদের নিজ নিজ হিসাব থেকে অর্থ আত্মসাতের শিকার হয়েছেন। ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন খোকা বলেন, তার হিসাবে ২ লাখ ৮০ হাজার টাকা ছিল, অথচ একাধিকবার শাখায় গিয়েও সম্পূর্ণ টাকা পাননি। জামায়াতের স্থানীয় নেতা সৈয়দ হাসান মাহমুদ টিটুও দাবি করেছেন, তার ২৫ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে, তবে মাহাবুব ও মনিরুলের সঙ্গে দলের কোনো সম্পর্ক নেই বলেও জানান তিনি।
এদিকে ইসলামী ব্যাংকের ফুলতলা শাখা থেকে জানানো হয়েছে, এজেন্টকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে গ্রাহকদের অর্থ ফেরত দেওয়ার জন্য। তবে বাস্তবে এখনো গ্রাহকরা টাকার কোনো হদিস পাননি, যার ফলে ব্যাংকিং নিরাপত্তা এবং গ্রাহক সেবার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে খুলনা জুড়ে।