অনলাইন ডেস্ক:
রাজশাহীর ঐতিহাসিক ভূবনমোহন পার্কটি হয়ে উঠেছে মোটরসাইকেল গ্যারেজ। স্থানীয় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী সিটি করপোরেশনের অনুমতি ছাড়াই এ গ্যারেজ গড়ে তুলেছেন। পার্কের ভেতরে শহীদ মিনারের সামনে এ গ্যারেজ বানানো হয়েছে।
এছাড়াও পার্কের ভেতরে বানানো হয়েছে জুতা-স্যান্ডেল ও চায়ের দোকান। এ নিয়ে ক্ষোভ ও হতাশা প্রকাশ করেছেন সচেতন নাগরিকরা। সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ বলছে, সাইকেল গ্যারেজ বানানোর বিষয়টি তারা অবগত নয়।
রাজশাহী মহানগরীর প্রাণকেন্দ্র মালোপাড়ায় অবস্থিত পার্কটি আনুমানিক ১৯০০ সালে উন্মুক্ত করা হয়। ভাষা শহীদদের স্মরণে পার্কটিতে ১৯৫৩ সালে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়। এছাড়া সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অনুষ্ঠানের জন্য একটি মঞ্চ রয়েছে।
মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) দুপুরে মালোপাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, ভূবনমোহন পার্কের প্রবেশপথে বসানো হয়েছে স্যান্ডেলের দোকান। পাশেই রয়েছে চায়ের দোকান। এরপর সারি করে রাখা হয়েছে মোটরসাইকেল। মোটরসাইকেল মালিকদের থেকে টাকা নিচ্ছিলেন মো. রবিন নামে এক যুবক। তিনি নিজেকে রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আরিফুল শেখ বনির ভাই বলে পরিচয় দেন।
ভূবনমোহন পার্কে গ্যারেজ বানিয়ে টাকা তুলছেন বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, দুই মাস ধরে প্রতিটি মোটরসাইকেল থেকে ১০ থেকে ২০ টাকা করে আদায় করছেন তারা কয়েকজন।
রবিনকে চাচাতো ভাই হিসেবে নিশ্চিত করে আরিফুল শেখ বনি বলেন, রবিন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। রাজশাহী মহানগর বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক নজরুল হুদা সেখানে পার্কিং করা মোটরসাইকেল থেকে তাদের ফি আদায় করতে বলেছেন।
এ বিষয়ে নজরুল হুদা বলেন, কয়েক মাস আগে কয়েকজন যুবক তার কাছে গিয়ে ভূবনমোহন পার্কের গ্যারেজে মোটরসাইকেল পাহারা দেওয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কারণ সেখানে রাখা মোটরসাইকেলের হেলমেট ও তেল চুরি হচ্ছে।
সিটি করপোরেশন থেকে অনুমতি নিয়েছিলেন কি না প্রশ্নে তিনি বলেন, স্থানীয় জনগণ তাদের নিরাপত্তা চায় বলে যুবকরা শুধু মোটরসাইকেল পাহারা দেওয়ার জন্য ফি আদায় করছে।
এদিকে ঐতিহাসিক পার্কটির বাণিজ্যিক ব্যবহারে রাজশাহী সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষের উদাসীনতাকে দায়ী করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) রাজশাহী জেলা শাখার সভাপতি আহমেদ শফি উদ্দিন। তিনি বলেন, অন্যান্য দেশে ঐতিহাসিক স্থানগুলো সংরক্ষণে নানা পদক্ষেপ নেওয়া হলেও এখানকার কর্তৃপক্ষ সেগুলো ধ্বংস করে দিচ্ছে।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এবিএম শরীফ উদ্দিন জানান, ভূবনমোহন পার্কে মোটরসাইকেল গ্যারেজের থেকে ফি আদায়ের বিষয়ে অবগত নই। বিষয়টি খতিয়ে দেখবো।