খুলনা ডেস্ক:
তেলেগু চলচ্চিত্রের বরেণ্য অভিনেতা ও পদ্মশ্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত কোটা শ্রীনিবাস রাও আর নেই। বার্ধক্যজনিত নানা জটিলতায় ১৩ জুলাই রোববার সকালে হায়দরাবাদের জুবিলি হিলসের ফিল্মনগরের নিজ বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই কিংবদন্তি অভিনেতা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর। মাত্র তিন দিন আগেই তিনি উদযাপন করেছিলেন নিজের জন্মদিন।
চার দশকেরও বেশি সময় ধরে তিনি তেলেগু, তামিল, কন্নড় ও হিন্দি ভাষার চলচ্চিত্রে অভিনয় করে গড়ে তুলেছেন এক সমৃদ্ধ ক্যারিয়ার। ১৯৭৮ সালে তেলেগু সিনেমা ‘প্রাণম খরিদু’র মাধ্যমে অভিনয়ে অভিষেক ঘটে তাঁর। এরপর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে ৭৫০টিরও বেশি ছবিতে বিভিন্ন ধরনের চরিত্রে অসাধারণ দক্ষতায় অভিনয় করেছেন। খলনায়ক, কমেডিয়ান কিংবা পার্শ্বচরিত্র—প্রতিটি ভূমিকাতেই ছিলেন দর্শকের প্রিয়।
২০০৫ সালে রাম গোপাল ভার্মার পরিচালনায় বলিউডে ‘সরকার’ ছবির ‘সিলভার মনি’ চরিত্রের মাধ্যমে তার অভিষেক ঘটে হিন্দি ছবিতে। তাঁর উল্লেখযোগ্য কিছু চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘আহা না পেল্লান্তা!’, ‘প্রতিঘাতনা’, ‘খাইদি নাম্বার ৭৮৬’ এবং ‘শিবা’। দুর্দান্ত অভিনয়গুণের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি ২০১৫ সালে ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রদত্ত ‘পদ্মশ্রী’ সম্মাননা লাভ করেন। এছাড়া, ৯টি নন্দী অ্যাওয়ার্ডসহ আরও বহু পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তিনি।
অভিনয়ের পাশাপাশি রাজনৈতিক অঙ্গনেও সক্রিয় ছিলেন কোটা শ্রীনিবাস রাও। ১৯৯৯ সালে তিনি অন্ধ্র প্রদেশের বিজয়ওয়াড়া পূর্ব বিধানসভা কেন্দ্র থেকে বিজেপির প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়ে ২০০৪ সাল পর্যন্ত বিধায়ক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
তাঁর মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমে এসেছে তেলেগু চলচ্চিত্রজগতে। সহকর্মী, ভক্ত ও রাজনৈতিক নেতারা শোক প্রকাশ করছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অভিনেতা বিষ্ণু মানচু এক্স (সাবেক টুইটার)-এ লেখেন, “শব্দের ঊর্ধ্বে এক কিংবদন্তি। শ্রীকোটা শ্রীনিবাস গারুর মৃত্যু আমার হৃদয় ভারাক্রান্ত করেছে। একজন অসাধারণ অভিনেতা, বিরল প্রতিভাধর মানুষ; যিনি প্রতিটি চরিত্রে প্রাণ সঞ্চার করতেন। আমি তাঁর সঙ্গে বহু ছবিতে কাজ করেছি এবং তাঁর অভিনয় দেখে বড় হয়েছি। তাঁর শিল্প, হাসি ও আত্মা আমাদের মাঝে চিরকাল বেঁচে থাকবে।”
তাঁর অবদান ভারতীয় চলচ্চিত্রে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।