খুলনা ডেস্ক:
উপকূলীয় জেলা নোয়াখালীতে নিম্নচাপের প্রভাবে টানা বৃষ্টি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ দেখা দিয়েছে। বুধবার বেলা সাড়ে ১১টার পর থেকে হাতিয়া উপজেলার সঙ্গে সারাদেশের নৌযোগাযোগ সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে স্থানীয় প্রশাসন। হাতিয়ার আশপাশের বঙ্গোপসাগর প্রচণ্ডভাবে উত্তাল হয়ে উঠেছে, সাগরে তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত জারি করা হয়েছে এবং সব মাছধরা নৌকা ও ট্রলারকে নিরাপদ আশ্রয়ে থাকতে বলা হয়েছে।
জেলা আবহাওয়া অফিস জানায়, গত ২৪ ঘণ্টায় বৃহস্পতিবার সকাল ৯টা পর্যন্ত নোয়াখালীতে ৬৭ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। সুস্পষ্ট লঘুচাপটি আরও ঘনীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে এবং তা উত্তর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চল এবং সমুদ্রবন্দরগুলোতে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।
নিঝুমদ্বীপের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। বুধবার সকাল থেকেই স্বাভাবিক জোয়ারের তুলনায় ৫-৬ ফুট পানি বৃদ্ধি পেয়েছে নদ-নদীগুলোতে। ফলে নিঝুমদ্বীপের ৯টি ওয়ার্ড প্লাবিত হয়ে পড়ে, বাড়িঘরে পানি ঢুকে যায়, এবং অনেক মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েন। দোকানপাট সরিয়ে নিতে হয়েছে, কিছু দোকান নদীতে ভেসে গেছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মেঘনা নদীর জোয়ারের পানি বেড়িবাঁধ না থাকায় সহজেই দ্বীপের ভেতরে ঢুকে পড়ে। নামারবাজার, শতফুল বন্দরসহ বিভিন্ন এলাকায় পানির ঢল নেমেছে। টানা বৃষ্টি, জোয়ারের পানি ও ঝড়ো হাওয়ার কারণে অনেক এলাকা বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, বাসিন্দারা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এবং চরম দুর্ভোগে রয়েছেন।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দিন জানান, আবহাওয়া স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সব ধরনের নৌ-চলাচল বন্ধ থাকবে। মাছধরার ট্রলারগুলোকে নিরাপদ স্থানে থাকতে বলা হয়েছে।
জেলা প্রশাসক খন্দকার ইসতিকায় আহমেদ বলেন, উপকূলীয় তিন উপজেলা—হাতিয়া, সুবর্ণচর ও কোম্পানীগঞ্জে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকা নজরদারিতে রাখা হয়েছে। বেড়িবাঁধগুলোর প্রতি পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নজরদারি জোরদার করতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় বসবাসরত লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে সরিয়ে নেওয়ার প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত করে রাখা হয়েছে যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলার জন্য।