মাসুদ রানা, নারায়নগঞ্জ:
কাঁচপুর হাইওয়ে থানা তাদের এখতিয়ারের বাইরে গিয়ে সাধারণ মানুষকে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তাদের নির্দেশে অন্যান্য পুলিশেরা রাস্তার পাশে ঘুমন্ত নিরীহ নিরপরাধ দোকান, ব্যাবসায়ীদের ঘুম থেকে তুলে নিয়ে বেদম ভাবে মারপিট, অকাথ্য ভাষায় গালাগালি, টাকা না দিলে মিথ্যা মামলায় হয়রানি করা এবং জিম্মি করে টাকা আদায় করার অভিযোগ উঠেছে। এভাবে কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় কর্মরত পুলিশ প্রতিনিয়ত লক্ষ লক্ষ টাকা মাসোয়ারী আদায় করছে বলে জানাগেছে।
একটি সূত্র থেকে জানাগেছে, কয়েক দিন আগে মদনপুর বন্দর থেকে দোকানের ভেভতর ঘুমিয়ে থাকা আবু সিদ্দিক সহ ১০ জনকে অন্যায় ভাবে ধরে নিয়ে পাঁচ লক্ষ টাকা দাবি করে এবং আবু সিদ্দিক উক্ত টাকা দিতে অস্বীকার করলে শিশু কিশোর সহ নিরাপরাধ ১০ জনকে মিথ্যা মামলায় বন্দর থানায় চালান দেওয়া হয়। রাতে দায়িত্বরত হাইওয়ে টহল পুলিশেরা ছিনতাই ডাকাতি বন্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে প্রকৃত অপরাধীদের কাছ থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা মাসোহারা আদায় করছে বলে জানাগেছে। পক্ষান্তরে অন্যায় ভাবে রাস্তার পাশের ঘুমন্ত দোকানদার, ব্যবসায়ীদের সাথে ভয়ানক খারাপ ব্যবহার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছে কয়েকজন। এসব প্রতিকারে দ্রুত ব্যাবস্তা নেওয়ার দাবি জানিয়েছে এলাকাবাসী। বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে অপরাধী হিসেবে অভিযুক্ত হাইওয়ে পুলিশ এখানো কাঁচপুর হাইওয়ে থানায় বহাল তবিয়তে থাকায় তাদের অপরাধ কর্মকান্ড গুলো অব্যাহত আছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর।
অন্যদিকে কাঁচপুর এলাকার আশপাশ দিয়ে ঢাকা চট্টগ্রাম হাইওয়ে রোডে ক্রমে অপকর্ম বাড়ছে ব্যাপক হারে । ছিনতাই, জুয়া, চাঁদাবাজি, অবৈধ সিএনজি, লেগুনা, ব্যাটারি চালিত অটোরিকশা ও ইজিবাইক পুলিশকে ম্যানেজ করে এসব বাহন মহাসড়কে চলছে উল্টোভাবে। ফলে প্রতিনিয়তই ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব বাহন আটকিয়ে ডাম্পিং করে লাখ লাখ টাকা বাণিজ্য করছে হাইওয়ে পুলিশ। পরিবহন মালিক ও শ্রমিকদের অভিযোগ, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের কাঁচপুরে পরিবহন চাঁদাবাজি নতুন নয়। দীর্ঘদিন ধরেই হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ করে পরিবহন সেক্টরে চলছে চাঁদাবাজি।
হাইকোর্টের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্তেও মহাসড়কে নিশ্চিন্তে চলছে সিএনজি ও ব্যাটারি চালিত থ্রি-হুলার। এসব বাহন নিয়ন্ত্রন করছে একাধিক গ্রুপ। কেউ সিএনজি, কেউ অটোরিকশা, কেউ ইজিবাইক ও কেউ মিশুক নিয়ন্ত্রন করছে হাইওয়ে পুলিশকে মাসোহরা দিয়ে।এসব ছোট বাহনগুলো হয়ে পড়েছে হাইওয়ে পুলিশের টাকার মেশিন। নিয়মিত মাসোহরা নিয়েও সিএনজি ও ইজিবাইক আটক করে ডাম্পিং বাণিজ্য করছে পুলিশ।
মাসোহারা দিতে দুএকদিন দেরি হলেই গাড়ি আটক করে ডাম্পিং করা হয়। পরে মাসোহারার টাকা দিয়ে অতিরিক্ত দুই থেকে আড়াই হাজার টাকা দিয়ে ডাম্পিং থেকে গাড়ি বের করতে হয়। জানা গেছে, কাঁচপুর স্ট্যান্ড থেকে হাইওয়ে থানা পর্যন্ত মহাসড়কে ফুটপাত দোকান বসিয়ে আদায় করা হচ্ছে লাখ লাখ টাকা চাঁদা। জানাগেছে এভাবে ফুটপাত চাঁদাবাজদের কাছ থেকে মাসোহারা পাচ্ছেন ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ।
মসোহারা দিতে দেরি হলেও দেওয়া হয় মামলা। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে দিনে চলছে মাটিবাহী ড্রাম ট্রাক। পুলিশকে মাসোহারা দেওয়ার কারণে ইজিবাইক ও অটোরিকশা চলছে উল্টোভাবে। এতে মহাসড়কে সৃষ্টি হচ্ছে বিশৃঙ্খলা। এবিষয়ে জানতে চাইলে কাঁচপুর হাইওয়ে থানার ওসি কাজী ওয়াহিদ মোর্শেদ মাসোহারা দেওয়ার প্রসঙ্গ এড়িয়ে গিয়ে বলেন, মহাসড়কের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আমারা তৎপর রয়েছি। সুনির্দিষ্ট প্রমাণ থাকলে অভিযুক্ত হবেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রমাণ থাকলে আইনগতভাবে কারোই এড়ানোর সুযোগ নেই।