খুলনা ডেস্ক:
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা) ১৩ মে ২০২৫ তারিখে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে তাদের প্রধান কার্যালয়ে দেশের ১৭টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের নিয়ে এক গুরুত্বপূর্ণ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে। এই সভার মূল লক্ষ্য ছিল টেকসই বিনিয়োগ পরিবেশ নিশ্চিত করতে নীতির ধারাবাহিকতা, চলমান সংস্কার কার্যক্রম এবং সাম্প্রতিক অগ্রগতির বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর পরামর্শ ও সুপারিশ গ্রহণ করা।
বিডা ও বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষের (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বিন হারুন সভায় সভাপতিত্ব করেন। তিনি বলেন, বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান দেশের জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি জড়িত, যা কোনো দলীয় স্বার্থের ঊর্ধ্বে। তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে আগামী ছয় থেকে আট মাসের মধ্যে বিডা যেসব পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে গঠনমূলক আলোচনা হবে।
সভায় অংশগ্রহণকারী রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে ছিল বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় নাগরিক পার্টি, লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিএম), বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি (বিজেপি), গণসংহতি আন্দোলন, গণ অধিকার পরিষদ, আমার বাংলাদেশ পার্টি, নাগরিক ঐক্য, বাংলাদেশ জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টি, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ) এবং ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ।
বিডার হেড অব বিজনেস ডেভেলপমেন্ট নাহিয়ান রহমান রচি সভায় বিডার কার্যক্রম, সংস্কার পরিকল্পনা, অগ্রগতির প্রতিবেদন এবং বিনিয়োগ সম্মেলনের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ করণীয় নিয়ে একটি উপস্থাপনা দেন। তিনি জানান, দেশের ২০০ জনের বেশি স্থানীয় বিনিয়োগকারী ও অংশীজনের সঙ্গে আলোচনা করে পাঁচটি বড় বিনিয়োগ-সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জ চিহ্নিত করেছে বিডা। এই সমস্যাগুলোর মধ্যে রয়েছে সরকারি সেবার মান, নীতির ধারাবাহিকতা, শিল্পখাতের সঙ্গে পরামর্শের অভাব, দুর্নীতি, এবং সম্পদের যথাযথ ব্যবহার।
বিডা এসব সমস্যার সমাধানে ইতোমধ্যে যে পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ভবিষ্যতে যে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে, তা রাজনৈতিক দলগুলোর সামনে উপস্থাপন করা হয় এবং তাদের মতামত চাওয়া হয়।
প্রত্যেক রাজনৈতিক দল বিডার এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে সাধুবাদ জানায় এবং বিনিয়োগ পরিবেশ উন্নয়নে বিডার গৃহীত সংস্কার পরিকল্পনার প্রশংসা করে। তারা দেশীয় বিনিয়োগকারীদের বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার আহ্বান জানান। একইসঙ্গে তারা দক্ষ শ্রমিক গড়ে তোলার জন্য প্রশিক্ষণ ব্যবস্থা, অবকাঠামোগত উন্নয়ন, আইনি জটিলতা নিরসন, শ্রমিকদের স্বার্থ সংরক্ষণ এবং পরিবেশবান্ধব বিনিয়োগের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করার পরামর্শ দেন।
সভায় রাজনৈতিক নেতারা দেশের সার্বভৌমত্ব, আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান।
সবার পরামর্শ ও সমর্থনের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান চৌধুরী আশিক বিন হারুন বলেন, জাতীয় স্বার্থের বাইরে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে না। চট্টগ্রাম বন্দর পুরো দেশের সম্পদ, একে বিশ্বমানের বন্দরে পরিণত করতে চাই, তবে জাতীয় স্বার্থ ও নিরাপত্তার বিষয়ে কোনো আপস করা হবে না।