মেহেরপুরের গাংনী উপজেলায় চলতি বোরো মৌসুমে মাজরা পোকার আক্রমণে ব্যাপক বিপাকে পড়েছেন ধানচাষিরা। মাজরা পোকা ধানের শিষ কেটে ফেলার কারণে বিঘাপ্রতি ধানের উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকেরা। যেখানে সাধারণত ২০ মণ ধান হতো, সেখানে এবার ফলন ৫ থেকে ৬ মণ পর্যন্ত কমে যেতে পারে বলে জানিয়েছেন অনেক কৃষক।
কৃষকেরা জানিয়েছেন, বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক ব্যবহারের পরও এই পোকা দমন করা সম্ভব হয়নি। ক্ষতিগ্রস্ত ধানক্ষেত ঘুরে দেখা গেছে, মাজরা পোকায় আক্রান্ত হয়ে অনেক জমির ধান আগেই শুকিয়ে গেছে। এই অবস্থায় কৃষি বিভাগের সহযোগিতা না পেয়ে কৃষকদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে। তারা অভিযোগ করেছেন, কৃষি কর্মকর্তারা মাঠে আসছেন না, পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছেন না, এমনকি চাষিদের সঙ্গেও পরামর্শ করছেন না।
স্থানীয় কৃষক বজলুর রহমান জানান, মাজরা পোকায় ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং মাঠে এখন পর্যন্ত কোনো কৃষি কর্মকর্তা যাননি। আব্দুল খালেক বলেন, কৃষি অফিসারদের দুর্ব্যবহারে অনেক সময় সমস্যার সমাধান না পেয়েই ফিরে আসতে হয়। একই ধরনের অভিযোগ করেছেন দিরাজুল ইসলাম, মিল্টন হোসেন ও শহিদুল ইসলামসহ একাধিক চাষি। তাদের দাবি, কৃষি বিভাগ যেন সকল চাষিকে সমানভাবে গুরুত্ব দিয়ে পাশে দাঁড়ায়।
চাষিরা মনে করেন, মাঠপর্যায়ে কৃষি দপ্তরের সক্রিয়তা এবং সময়মতো পরামর্শ পেলে মাজরা পোকার ক্ষতি অনেকটাই প্রতিরোধ করা যেত। স্থানীয়দের অনুরোধ, গ্রামভিত্তিক সভা করে কীটনাশক ব্যবহারের সঠিক নিয়ম ও পদ্ধতি জানানো হোক যাতে ভবিষ্যতে এমন ক্ষতির পুনরাবৃত্তি না ঘটে।
গাংনী উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা শিমুল হোসেন জানান, তিনি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছেন এবং মাঠ পরিদর্শন করে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবেন। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ইমরান হোসেন বলেন, মাঝে মাঝে কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে চাষিদের না পাওয়ার ঘটনাও ঘটে। তবে যদি সমস্যার বিষয়টি অফিসকে জানানো হয়, তাহলে তারা দ্রুত পদক্ষেপ নেবেন।
এই পরিস্থিতিতে কৃষকদের দাবি হলো, সরকারি কৃষি দপ্তরের কার্যকরী সহযোগিতা এবং মাঠ পর্যায়ে দায়িত্বশীলতা আরও জোরদার হোক যাতে মাজরা পোকার মতো সমস্যার দ্রুত সমাধান সম্ভব হয়।