খুলনা ডেস্ক:
মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার আবারও বাংলাদেশি কর্মীদের জন্য খুলে যেতে পারে—এমন সম্ভাবনায় নতুন করে আশাবাদী হয়ে উঠেছেন অভিবাসন সংশ্লিষ্টরা। ২০২৪ সালের শুরুর দিকে বন্ধ হয়ে যাওয়া এই বাজার আবারও সচল হওয়ার পথ তৈরি হয়েছে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে।
আজ ১৫ মে, মালয়েশিয়ার প্রশাসনিক রাজধানী পুত্রজায়ায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। এই বৈঠকে অংশ নিতে বাংলাদেশ থেকে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুলের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছেন। প্রতিনিধি দলের অন্যান্য সদস্যরা হলেন সিনিয়র সচিব নেয়ামত উল্ল্যা ভূঁইয়া এবং উপসচিব মো. সারওয়ার আলম।
বৈঠকে আলোচ্য বিষয়গুলোর মধ্যে প্রধান গুরুত্ব পাচ্ছে বন্ধ শ্রমবাজার পুনরায় চালুর সম্ভাবনা। বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তারা আশা করছেন, বিদ্যমান সমঝোতা স্মারকের অধীনেই কর্মী পাঠানো শুরু হতে পারে। তবে এই সমঝোতা স্মারকের মেয়াদ ডিসেম্বর ২০২৫ পর্যন্ত থাকায় নতুন চুক্তির সুযোগ আপাতত নেই। ফলে বাংলাদেশ পক্ষ থেকে স্মারকের কিছু শর্ত সংশোধনের প্রস্তাবও দেওয়া হবে।
মালয়েশিয়ায় বৈধ এজেন্সির মাধ্যমে কর্মী পাঠানোর বিষয়টি এবার আরও স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগতভাবে বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। পূর্বে কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়ায় চক্র তৈরির অভিযোগ উঠেছিল, যার পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি বাংলাদেশসহ আরও ১৩টি দেশের শ্রমবাজার বন্ধ করে দেয়। তবে মালয়েশিয়ায় অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে শ্রমবাজার পুনরায় চালুর বিষয়ে ইতিবাচক পদক্ষেপ দেখা যাচ্ছে।
বাংলাদেশ থেকে মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ইতিহাস দীর্ঘদিনের। ২০০৪ সাল থেকে ২০২৪ সালের মে পর্যন্ত দেশটিতে গেছেন প্রায় ১৩ লাখ বাংলাদেশি কর্মী। এর মধ্যে রেকর্ড সংখ্যক, প্রায় সাড়ে তিন লাখ কর্মী গিয়েছেন ২০২৩ সালে। মালয়েশিয়ায় কাজের সুযোগ পাওয়া বাংলাদেশের জন্য বিদেশি রেমিট্যান্সে বড় অবদান রেখে আসছে।
গত মাসে মালয়েশিয়ায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশনার বরাবর প্রবাসীকল্যাণ মন্ত্রণালয় একটি চিঠি পাঠায়। এতে ২১ থেকে ২২ মে ঢাকায় যৌথ কারিগরি কমিটির সভা করার প্রস্তাব মালয়েশিয়া দিয়েছে, যা বাংলাদেশ ইতিমধ্যে অনুমোদন করেছে।
বিদেশে কর্মসংস্থান বাড়ানো এবং বৈধ উপায়ে শ্রমিক পাঠানোর লক্ষ্যে এই বৈঠক এবং পরবর্তী যৌথ কারিগরি কমিটির সভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।