দেশের দুই জেলায় এক রাতেই দুইটি খামারে দুর্বৃত্তদের ভয়াবহ নাশকতায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন খামার মালিকরা। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি মৎস্য খামারের তিনটি পুকুরে বিষ প্রয়োগে মারা গেছে প্রায় ৭০ লাখ টাকার মাছ। অপরদিকে, বগুড়ার আদমদীঘিতে একটি পোলট্রি খামারে সহস্রাধিক মুরগির বাচ্চা পদদলিত করে হত্যা করা হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাতে এই দুই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
দৌলতপুর উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের বেনজির আহমেদ বাচ্চুর মালিকানাধীন তিনটি পুকুরে এই ঘটনা ঘটে। মাছ চাষের জন্য বিখ্যাত এই অঞ্চলে পাঙাশ, তেলাপিয়া, রুই, মৃগেল ও চিতলসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছ চাষ করা হচ্ছিল।
মাছ চাষি রতন আলী জানান, তিনটি পুকুরের আয়তন প্রায় ছয় বিঘা। প্রতিটি পুকুরে শত শত মণ মাছ ছিল যার অনেকের ওজন ছিল ৮ থেকে ১২ কেজি পর্যন্ত। বুধবার ভোরে পুকুরের পানিতে ভেসে থাকা মৃত মাছ দেখতে পান স্থানীয়রা।
দৌলতপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা হোসেন আহমদ বলেন, “পুকুরের পানি ও কাদা পরীক্ষা করে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে অ্যামোনিয়া গ্যাস ট্যাবলেট প্রয়োগ করা হয়েছে। এতে অক্সিজেন ঘাটতিতে মাছগুলো মারা গেছে।”
দৌলতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজমুল হুদা জানান, লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন এবং তদন্ত চলছে। প্রাথমিক হিসাব অনুযায়ী ক্ষতির পরিমাণ ৫০ থেকে ৬০ লাখ টাকা।
বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলার নসরতপুর কলেজপাড়া এলাকায় পান্না পোলট্রি ফার্মে মঙ্গলবার রাতেই এ ঘটনা ঘটে। ফার্মের মালিক হারুনুর রশিদ জানান, ফার্মে এক হাজারের বেশি ১৫ দিন বয়সী মুরগির বাচ্চা ছিল। রাতে দুর্বৃত্তরা খামারের বেড়া কেটে ভেতরে ঢুকে পদদলিত করে বাচ্চাগুলো মেরে ফেলে।
তিনি বলেন, “সন্ধ্যায় খাওয়ানোর পর খামার বন্ধ করে বাসায় যাই। রাত সাড়ে ১১টার দিকে কেয়ারটেকার এসে দেখতে পান সব বাচ্চা মরে পড়ে আছে।”
এই ঘটনায় ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৫ লাখ টাকা বলে দাবি করেন হারুনুর রশিদ। তাঁর স্ত্রী শবনম মোস্তারি বাদী হয়ে তিনজনের বিরুদ্ধে আদমদীঘি থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
আদমদীঘি থানার এসআই আমিরুল ইসলাম জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে এবং বিষয়টি তদন্তাধীন।
দুই জেলার এই হামলার ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে চরম উদ্বেগ বিরাজ করছে। ভুক্তভোগীরা দ্রুত অপরাধীদের শনাক্ত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।