খুলনা ডেস্ক:
দীর্ঘ ৫৮ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে আবারও প্রাণ ফিরে পেয়েছে বাগেরহাটের ভৈরবতীর কেবি মাছ বাজার। শুক্রবার ভোরে সাগর থেকে মাছ নিয়ে আসে দুটি ট্রলার। দীর্ঘ সময় পর ট্রলার ভেড়ায় বাজারে কিছুটা গতি ফিরেছে, তবে প্রত্যাশিত পরিমাণে মাছ না থাকায় চাহিদার তুলনায় সরবরাহ ছিল অনেক কম। ফলে বাজারে মাছের দাম চড়েছে চোখে পড়ার মতো।
জেলেরা জানাচ্ছেন, সাগরে গেলেও তারা খুব বেশি সময় মাছ ধরতে পারেননি। রুহুল নামের এক জেলে জানান, তাদের ট্রলার যান্ত্রিক ত্রুটিতে পড়ে, ফলে কয়েকবার জাল ফেলেই ফিরে আসতে বাধ্য হন। ফলে মাছের পরিমাণ ছিল অল্প। তবে যা পেয়েছেন, তার মধ্যে ইলিশসহ অন্যান্য মাছও ছিল।
বাজারে ইলিশের দামে ভোক্তারা চমকে গেছেন। ছোট আকারের (২০০–৩০০ গ্রাম) ইলিশ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০০ থেকে ৮০০ টাকায়। মাঝারি ধরনের (আধা কেজি থেকে ৮০০ গ্রাম) ইলিশের দাম কেজিতে উঠেছে ১২০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত। আর বড় আকারের এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হয়েছে ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকায়।
ইলিশ ছাড়াও অন্যান্য সামুদ্রিক মাছের দামও ছিল ঊর্ধ্বমুখী। রূপচাঁদা আকার ভেদে প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ১২০০ টাকা, আর কঙ্কন, ঢেলা চ্যালা, লইট্টা, ছুরি, ভেটকি, বিড়াল জাবাসহ নানা মাছ বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ১০০০ টাকায়।
দাম বেশি হলেও উৎসুক ক্রেতারা বাজারে এসেছেন। মোরেলগঞ্জ থেকে আসা মাছ ব্যবসায়ী তৈয়ব মুন্সি বলেন, নিষেধাজ্ঞা চলাকালে তিনি বাজারে আসেননি। অনেক দিন পর আজ এসে কিছু মাছ কিনেছেন, যদিও দাম বেশি। এত দামে কিনে বিক্রি করে লোকসান হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে বলে জানান তিনি।
কেবি বাজার আড়তদার সমিতির সাধারণ সম্পাদক অনুপ কুমার বিশ্বাস বলেন, নিষেধাজ্ঞা শেষে শুক্রবার প্রথম ট্রলার এসেছে। জেলেরা তেমন মাছ পাননি, তবে বাজারে পাইকারের ভিড় বেশি। এ কারণেই দামে প্রভাব পড়েছে। আগামীতে যদি সাগরে মাছ ধরা বাড়ে, তাহলে দামও কিছুটা কমে আসবে।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, চলতি বছর ১৫ এপ্রিল থেকে ১১ জুন পর্যন্ত সাগরে মাছ ধরা নিষিদ্ধ ছিল। নিষেধাজ্ঞা শেষে শুরু হয়েছে মাছ আহরণ, তবে বাজারে স্বস্তি ফিরতে হয়তো আরও কিছুদিন সময় লাগবে।