অনলাইন ডেস্ক:
পাবনায় অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযানে যায় প্রশাসন। তবে আভিযানিক দলকে সড়কে আটকে দেন ভাটা মালিক ও শ্রমিকপক্ষ।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কুষ্টিয়ার সাদিপুর ইউনিয়নের ভ্রমড়ার মোড় এলাকায় প্রায় দেড় হাজার জনতা সড়ক অবরোধ করে আভিযানিক দলের গাড়ি আটকে দেয়। এসময় তাদের বাধার মুখে পিছু হটতে বাধ্য হয় দলটি। এরপর কুষ্টিয়ার আরও দুটি অভিযানিক দল এলে তারাও পিছু হটতে বাধ্য হয়।
এ অভিযানের নেতৃত্ব দেন পাবনা সদরের সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুরাদ হোসেন। এছাড়া কুষ্টিয়ার সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) রিফাতুল ইসলাম ও কুমারখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) আমিরুল আরাফাতের নেতৃত্বাধীন দুটি আভিযানিক দল উপস্থিত ছিলেন।
অভিযানিক দলের দেওয়া তথ্যমতে, পাবনায় ব্যাঙের ছাতার মতো অবৈধ ইটভাটা গড়ে উঠেছে। পরিবেশ অধিদপ্তর বা জেলা প্রশাসক কোনো দপ্তরেরই অনুমোদন নেই এসব ভাটার। কোনো কোনো ভাটায় শর্তের বাইরে গাছ পুড়ানো হয়। ব্যবহার করা হয় নিষিদ্ধ চিমনি। এগুলো বন্ধ করতে ও নিয়মের আওতায় আনতে বুধবার উপজেলার হেমায়েতপুর এলাকার ইটভাটাগুলোতে অভিযানে বের হয় পাবনা ও কুষ্টিয়ার আভিযানিক তিনটি দল। এসময় দলগুলো কুষ্টিয়ার সাদীপুর ইউনিয়নের ভ্রমড়ার মোড় এলাকায় পৌঁছালে ভাটার মালিকপক্ষ হাজারের অধিক শ্রমিক নিয়ে সড়ক আটকে দেয়। এসময় তারা বিভিন্ন স্লোগান দেন।
অবরোধকারীদের পক্ষ থেকে সাদীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক গোলাম আজম বলেন, হাজার হাজার শ্রমিক এখানকার ইটভাটাগুলোতে কাজ করে সংসার চালায়। তারা ভাটা মালিকের থেকে মোটা অংকের দাদন (অগ্রিম টাকা) নিয়েছে। এখন ভাটা বন্ধ হলে তারা কি করে খাবে, কীভাবে দাদন (অগ্রিম টাকা) পরিশোধ করবে? যদি বন্ধ করতেই হয় তবে ইটভাটা শুরুর আগেই মাইকে ঘোষণা দিয়ে বন্ধ করতো। তাহলে শ্রমিকরা এতো এতো টাকা অগ্রিম নিতেন না।
শ্রমিকদের পক্ষে সাদীপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আ. মজিদ বলেন, জেলা প্রশাসকের কাছে আমাদের আবেদন লেবারদের স্বার্থ চিন্তা করে এবছরের মত ইটভাটাগুলো চলতে দিক। কারণ ইতোমধ্যে শত শত কোটি টাকা ইনভেস্ট করা হয়েছে, লেবাররা অগ্রিম টাকা নিয়েছে। এখন ইটভাটা বন্ধ হলে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবেন লেবাররা।
এ বিষয়ে অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুরাদ হোসেন জানান, হেমায়েতপুরের এই এলাকায় অভিযানে এলে আমাদের বিভ্রান্ত করে। পাবনার অভিযানিক দল গেলে বলে এই ইটভাটা কুষ্টিয়ার মধ্যে, আবার কুষ্টিয়ার টিম গেলে বলে পাবনার মধ্যে। এজন্য এবার আমরা কুষ্টিয়া ও পাবনার তিনটি টিম যৌথ অভিযানে এসেছিলাম। কিন্তু আমরা ভ্রমড়ার মোড় এলাকায় এলে ইটভাটা মালিকরা শ্রমিকদের ব্যবহার করে আমাদের আটকে দেন। একপর্যায়ে কয়েক হাজার নারী, শিশু ও পুরুষ গাড়ির সামনে বসে রাস্তা প্রতিরোধ করলে সামনে অগ্রসর হওয়া সম্ভব হয়নি।
পরিবেশ অধিদপ্তর ও জেলা প্রশাসনের তথ্যমতে, পাবনা সদর উপজেলায় ৫২টিসহ জেলায় মোট ১৭৩টি ইটভাটা রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ৩০টি বৈধ। এর বাইরে সবগুলো অবৈধভাবে পরিচালনা করা হচ্ছে।