|
ডেঙ্গু রোগী গতবছরের চেয়ে ৫ গুণ |
|
|
|
|
|
অনলাইন ডেস্ক: ডেঙ্গুর প্রাদুর্ভাব বাড়ার চিত্র তুলে ধরে দেশবাসীকে এইডিস মশাবাহিত এই রোগ থেকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। সোমবার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, “ডেঙ্গু বেড়ে গেছে। এ বিষয়ে আমরা, আমাদের অধিদপ্তর যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। “মে মাস পর্যন্ত ১৭০৪ ডেঙ্গু রোগী আমরা পেয়েছি। মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। এবং আমরা যদি গতবছরের সঙ্গে তুলনা করি, এই বছর রোগীর সংখ্যা প্রায় পাঁচ গুণ, গতবছরের তুলনায়। অর্থাৎ অনেক রোগী বৃদ্ধি পেয়েছে।” ডেঙ্গু প্রতিরোধে নেওয়া পদক্ষেপের অংশ হিসাবে হাসপাতাল পরিচালকদের সঙ্গে সভা করার পাশাপাশি চিকিৎসক ও নার্সদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান মন্ত্রী। তিনি বলেন, “আমরা যে সার্ভে করার, ডেঙ্গু সার্ভে যেটা সেটা চলমান আছে। আমরা সেই সার্ভে রিপোর্টটা দুই সিটি করপোরেশনকে দিয়েছি। হাসপাতালে আলাদা কর্নার ও ওয়ার্ড তৈরি করা হচ্ছে। এবং সে বিষয়েও আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি।” সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য পদক্ষেপ নেওয়ার কথা তুলে ধরে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, কীভাবে ডেঙ্গু থেকে সচেতন থাকা যায় এবং কেউ আক্রান্ত হলে যাতে হাসপাতালে নেওয়া যায়, সেসব কাজে সেনাবাহিনীকেও যুক্ত করা হয়েছে। “রোগী ম্যানেজমেন্ট গাইডলাইন যেটা, সেটার উন্নত সংস্করণ করা হয়েছে। চিকিৎসারও নতুন গাইডলাইন করা হয়েছে।” স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সোমবারের তথ্য অনুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ৭২ জন এইডিস মশাবাহিত এ রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন; তাদের মধ্যে ৫৮ জনই ভর্তি হয়েছেন ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে, ঢাকার বাইরে নতুন রোগী মিলেছে ১৪ জন। আর এ বছর সব মিলিয়ে ১৮৪৩ জন ডেঙ্গু নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১২৩৫ জন ঢাকায় এবং বাকি ৬০৮ ঢাকার বাইরের। ডেঙ্গু নিয়ে যারা হাসপাতালে গেছেন, তাদের মধ্যে ১৮৪৩ জন এখনও চিকিৎসাধীন। এ বছর ডেঙ্গুতে মারা গেছেন ১৩ জন, যাদের দশজন ঢাকার। অবশ্য যারা ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলেও পরীক্ষা করাননি বা হাসপাতালে ভর্তি হননি, তাদের তথ্য এ পরিসংখ্যানে আসেনি। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে কক্সবাজারে অবস্থানরত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো এবার ডেঙ্গুর ‘হটস্পট’ হয়ে উঠেছে। তবে আক্রান্ত রোহিঙ্গাদের সংখ্যা এই পরিসংখ্যানে না এনে আলাদাভাবে হিসাব করছে সরকার। রোববার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ সম্মেলনেও এ বছরের ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে সতর্ক করা হয়। অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আহমেদুল কবির সেখানে বলেন, “বাংলাদেশ অনেক জনবহুল, তার ওপর এখানে দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে। ফলে এখানে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ সহজ না। এরই মাঝে অপ্রত্যাশিত কিছু মৃত্যু হয়েছে। মে মাসে যেটুকু হয়েছে, তা অন্যান্য সময়ে হয়নি।” মে মাসের ২৯ দিনে সারা দেশে ৮৫৭ জন ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন, যা এ বছরের সর্বোচ্চ। এ মাসে ডেঙ্গুতে মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। এর আগে জানুয়ার মাসে ডেঙ্গু নিয়ে হাসপাতালে যান ৫৬৬ জন, মৃত্যু হয় ৬ জনের। আর ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন ডেঙ্গু রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। রোববারের সংবাদ সম্মেলনে আহমেদুল কবির বলেন, “আমরা এরই মাঝে সিটি করপোরেশনগুলোকে জানিয়েছি, খুব দ্রুত যদি মশার স্থানান্তর নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে যে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটতে পারে। দুই সিটি করপোরেশনের সাথেই আমাদের যোগাযোগ হয়। আমরা তাদের ম্যাপিং করে জানিয়ে দিই, কোথায় বেশি ছড়াচ্ছে। “তাদের জায়গা থেকে আরেকটু বেশি অ্যাক্টিভ হতে হবে। যেহেতু আমরা জানিয়ে দিচ্ছি, কোথায় কী হচ্ছে, তাই তাদের উড়ন্ত মশা নিয়ন্ত্রণ, লার্ভা ধ্বংসসহ তারা যেসব ব্যবস্থা নেন, সেগুলোর মাধ্যমে যেন আমরা ভেক্টরটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।” জরুরি কোনো ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সরকারের প্রস্তুতি আছে মন্তব্য করে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক সোমবারের সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “আপনাদের মাধ্যমে আমরা জনগণকে অবহিত করতে চাই, আপনারা ডেঙ্গু প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা নিন। “আপনার আঙিনা, আশেপাশের আঙিনা পরিষ্কার রাখুন, নিজের ঘর স্প্রে করুন, আশেপাশে যদি জঙ্গল থাকে স্প্রে করুন, পানি বা অন্য কিছু যদি জমে থাকে সেটা সরিয়ে ফেলা- এই কাজগুলো আমাদের নিজেদেরকে করতে হবে।” আক্রান্ত হলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে যাওয়ার পরামর্শ দিয়ে মন্ত্রী বলেন, সময়মত চিকিৎসা নিলে সবাই ভালো হয়ে যাচ্ছেন। “আমরা প্রস্তুতি নিয়েছি, জনগণকে আহ্বান করছি, আপনারা ডেঙ্গু মশা থেকে একটু নিরাপদে থাকবেন। এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সাথে আমাদের নিয়মিত যোগাযোগ হয়, আমরা একসঙ্গে কাজ করি। “মশা নিধনের কাজটা তারাই করে। তথ্য আমরা দিয়েছি, যাতে উনারা সঠিক জায়গায় গিয়ে স্প্রে করার বা অন্যান্য কার্যক্রমটা করতে পারেন।” এইডিস মশাবাহিত এই রোগে আক্রান্ত হয়ে গত বছর ৬২ হাজার ৩৮২ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হন। তাদের মধ্যে রেকর্ড ২৮১ জনের মৃত্যু হয়। এর আগে ২০১৯ সালে দেশের ৬৪ জেলায় এক লাখের বেশি মানুষ ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে গিয়েছিলেন, যা এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ। সরকারি হিসাবে সে বছর মৃত্যু হয়েছিল ১৬৪ জনের।
|
|
|
|
|
|
|
|
প্রধান সম্পাদক: এনায়েত ফেরদৌস
, অনলাইন সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত ) কামরুজ্জামান মিল্টন
|
নির্বাহী সম্পাদক: এস এম আবুল হাসান
সম্পাদক জাকির হোসেন কর্তৃক ২ আরকে
মিশন রোড ঢাকা ১২০৩ থেকে প্রকাশিত ও বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল ঢাকা ১০০০ থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ২/২, ইডেন কমপ্লেক্স (৪র্থ তলা) সার্কুলার রোড, ঢাকা ১০০০।
ফোন: ০১৭২৭২০৮১৩৮,
০১৪০২০৩৮১৮৭
,
০১৫৫৮০১১২৭৫, ই-মেইল:bortomandin@gmail.com
|
|
|
|