এ বছর বর্ষার আগেই বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অন্যান্য বছরের চেয়ে বেশি। তাই আসছে বর্ষা মৌসুমে এইডিসবাহিত এই রোগ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সবাইকে সতর্ক এবং সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক সংবাদ সম্মেলনে এই সতর্কবার্তা দেওয়া হয়। এতে অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. এবিএম খুরশীদ আলমসহ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. নাজমুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছরের তথ্যের সঙ্গে তুলনা করে তারা দেখেছেন এ বছর এ সময় পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অন্যান্য বছরের কয়েকগুণ বেশি। “যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বর্ষা মৌসুম এখনও শুরু হয়নি। সেজন্য আমরা মনে করি, ডেঙ্গু নিয়ে সতর্কতা এবং প্রস্তুতির প্রয়োজন আছে।” ডেঙ্গু প্রতিরোধে স্বাস্থ্য বিভাগের যা যা করণীয়, তা নেওয়া শুরু হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা দেশের মানুষকে বলতে চাই, নিজ নিজ জায়গা থেকে সতর্কতা এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার যে বিষয়টি আছে, তা যেন আমরা মেনে চলি।”
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসাবে, এ বছরের ১ জানুয়ারি থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত সারাদেশে ১৫৩৩ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ বছর এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১৩ জনের। তবে আক্রান্ত রোগীর প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি, কারণ আক্রান্ত সবাই হাসপাতালে ভর্তি হন না। আবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ভর্তি রোগীর যে তথ্য দেয়, তা কেবল ঢাকার সরকারি-বেসরকারি ৪১টি হাসপাতাল এবং বিভিন্ন জেলার সিভিল সার্জন অফিস থেকে পাঠানো হয়।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্যে দেখা গেছে, হাসপাতালে এ বছর জানুয়ারি মাসে ৫৬৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ১৬৬ জন, মার্চে ১১১ জন, এপ্রিলে ১৪৩ জন এবং মে মাসের ২০ দিনে ডেঙ্গুরোগী ভর্তি হয়েছে ৪৬১ জন। জানুয়ারি মাসে ৬ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৩ জন, এপ্রিলে দুজন এবং মে মাসে এখন পর্যন্ত দুজনের মৃত্যু হয়েছে ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ২৩ মে পর্যন্ত সারাদেশের হাসপাতালগুলোয় ৩৪ জন রোগী ভর্তি হয়েছিল। তবে গত বছর ওই সময় পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কারও মৃত্যু হয়নি।
এর আগে ২০২১ সালের জানুয়ারিতে ৩২ জন, ফেব্রুয়ারিতে ৯ জন, মার্চে ১৩ জন, এপ্রিলে ৩ জন এবং মে মাসে ৪৩ জন রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল বলে জানাচ্ছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য। মে মাস পর্যন্ত ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা যায়নি।
ডেঙ্গু রোগের বাহক এইডিস মশা; ফলে এই রোগ প্রতিরোধে মশা নিধনের উপরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। ডা. নাজমুল বলেন, “আমাদের সঙ্গে ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন… আমরা একসঙ্গে যেহেতু কাজ করি। মশক নিধন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এই কাজগুলো আরও জোরদার করা যায় তাহলে এই মৌসুমে ডেঙ্গু নিয়ে আমাদের যে ভীতি… গত বছরও আমরা দেখেছি অনেকে আক্রান্ত হয়েছে…অনেকগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু হয়েছে সেটা আমরা কমিয়ে আনতে পারব। স্বস্তির পরিবেশ তৈরি হবে।”