সোমবার, এপ্রিল ২৯, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * সংগীত শিল্পীর মাদকের কারবার!   * সর্বাঙ্গের ব্যথায়,মলম দিবে কোথায়,গ্যাড়াকল চালকদের সম্পদের লোমহর্ষক ঘটা,তবু থামেনি রক্তচোষা   * সাবেক আইজি বেনজীরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে রিট   * গত ১৫ বছরে দেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন হয়েছে : ওবায়দুল কাদের   * গাজা উপত্যকায় এক গণকবরেই ৩০০ লাশ   * মিয়ানমার নৌবাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলি, ২ বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ   * খিলগাঁয়ে ট্রেন দূর্ঘটনায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ   * বোটক্লাব কান্ডে পরীমণির বাট খাচ্ছে !   * মালিকদের লুটপাটে বেসরকারি অনেক ব্যাংক ধ্বংসের মুখে   * গুলশানের বারের সামনে হাতাহাতিতে তিন নারী গ্রেফতার  

   অপরাধ-দূর্নীতি
হাইকোর্টের রায়-দখলকৃত গুলশানের বাড়ি ছাড়তে হচ্ছে সালাম মুর্শেদীকে
  Date : 20-03-2024
Share Button


ডেস্ক রিপোর্ট

খুলনা-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে তার দখলকৃত গুলশানের বাড়ি ছাড়তে হবে। গতকাল মঙ্গলবার এ আদেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মো: নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের ডিভিশন বেঞ্চ এ রায় দেন। রায়ে আদালত বলেন, দুদকসহ অন্যান্য সংস্থার তদন্ত রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে সালাম মুর্শেদী গুলশানের যে বাড়িতে বসবাস করছেন সেটি সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তি।
দখলকৃত বাড়িটি ছাড়তে হবে রায়ের অনুলিপি প্রকাশের ৩ মাসের মধ্যে। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় বাড়িটি গ্রহণ করবে। রায়ে আদালত বলেছেন, দুদকসহ অন্যান্য সংস্থার তদন্ত প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে যে, সালাম মুর্শেদী গুলশানের যে বাড়িতে বসবাস করছেন সরকারের পরিত্যক্ত সম্পত্তি। সুক্ষ্ম জালিয়াতির মাধ্যমে সালাম মুর্শেদী এটি দখলে নিয়েছেন। তদুপরি পরিত্যক্ত সরকারি এ সম্পত্তি কীভাবে সালাম মুর্শেদী দখল করলেন এবং এ প্রক্রিয়ায় আর কারা জড়িত তা দুদককে স্বাধীনভাবে তদন্তের নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যরিস্টার অনীক আর হক। সালাম মুর্শেদীর পক্ষে সিনিয়র অ্যাডভোকে প্রবীর নিয়োগী ও অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা শুনানি করেন। সরকারপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সাইফুদ্দিন খালেদ। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পক্ষে অ্যাডভোকেট খুরশীদ আলম খান শুনানিতে অংশ নেন। এর আগে গত ৩ মার্চ আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সংক্রান্ত রিটের শুনানি শেষ হয়।
গত ২৯ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে রিটের পক্ষের ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছিলেন, রাজউকের ও দুদকের হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে গুলশানে সালাম মুর্শেদী যে বাড়িতে বাস করছেন সেটা রাষ্ট্রের সম্পত্তি। এই বাড়িতে তিনি এখন এক মুহূর্তও থাকতে পারেন না। ব্যারিস্টার সুমন বলেন, মানুষ অপহরণের মত সালাম মুর্শেদী গুলশানের বাড়ি অপহরণ করে বাস করছেন। এই বাড়িতে তিনি প্রতি সেকেন্ড অবৈধভাবে বাস করছেন। এ সময় হাইকোর্ট রাজউকের আইনজীবীকে প্রশ্ন রেখে বলেন, সেটেলমেন্ট কোর্টের অর্ডার ছাড়া এই সম্পত্তি কিভাবে সালাম মুর্শেদীর কাছে হস্তান্তর করা হলো? গত বছর ১ নভেম্বর সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না-এই মর্মে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে এ সম্পত্তি সম্পর্কিত সব কাগজপত্র ১০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) রাজউক, গণপূর্ত বিভাগ ও সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দেন আদালত। তারও আগে সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে রিট করা হয়। ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন। রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক), রাজউক, গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবসহ সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।
গতকাল হাইকোর্টের রায়ের পর সালাম মুর্শেদীর আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা বলেছেন, জনস্বার্থের মামলায় বাড়ি ছেড়ে দেয়ার রায় একটি বিরল ঘটনা। এর আগে কখনো উচ্চ আদালত এরকম রায় দেননি। এ রায়ের বিরুদ্ধে আমরা আপিল করবো। তিনি বলেন, কোনো উপযুক্ত আদালত এর আগে সালাম মুর্শেদীর বাড়ি নিয়ে কোনো রায় দেননি। সরাসরি হাইকোর্টে এসে বাড়ি নিয়ে জনস্বার্থে মামলা করলেন। সেই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট বাড়ি ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দিলেন। আদালত বলেছেন, রায় প্রকাশের পর তিন মাসের মধ্যে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর বাড়িসহ গুলশান ২ এর ১০৪ নম্বর ররাডের বাড়িটি বুঝিয়ে দিতে হবে আবদুস সালাম মুর্শেদীকে। আর গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিবকে ৩ মাসের মধ্যে বাড়িটি বুঝে পাওয়ার ১৫ দিনের মধ্যে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে হবে। এ রায়ের পর ব্যারিস্টার অনীক আর হক বলেন, সালাম মুর্শেদীর গুলশানের যে বাড়িটি সেটি আসলে পরিত্যক্ত সম্পত্তি। এটি নিয়ে দীর্ঘ শুনানির পর আজ রায় দিয়েছেন। রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেছেন-এটা পরিত্যক্ত সম্পত্তি। সরকারের তালিকায় রয়েছে। তাই এটি হস্তান্তর (সালাম মুর্শেদীর কাছে)সম্পূর্ণ অবৈধ। এছাড়া আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে রায় পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর মন্ত্রণালয়ের সচিবকে এটি বুঝে পাওয়ার ১৫ দিনে হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার বরাবরে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর রিট আবেদনটি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। রিটে বলা হয়, রাজধানীর গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর সড়কে সি ই এন (ডি)-২৭ এর ২৯ নম্বর বাড়িটি ১৯৮৬ সালের অতিরিক্ত গেজেটে খ তালিকায় পরিত্যক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত। কিন্তু আব্দুস সালাম মুর্শেদী সেটি দখল করে বসবাস করছেন। রিটে ২০১৫ সালের ১৩ এপ্রিল, ২০১৬ সালের ২০ জানুয়ারি ও ২০২২ সালের ৪ জুলাই রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) চেয়ারম্যানকে দেয়া গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের তিনটি চিঠি যুক্ত করা হয়েছে।
২০১৫ ও ২০১৬ সালে দেয়া চিঠিতে পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে বাড়িটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও আব্দুস সালাম মুর্শেদী কীভাবে বাড়িটি দখল করে আছেন রাজউক চেয়ারম্যানের কাছে এ ব্যাখ্যা চেয়েছিলো পূর্ত মন্ত্রণালয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সেই চিঠি আমলে না নেয়ায় ফের ২০২২ সালের ৪ জুলাই চিঠি দেয়া হয়। চিঠিতে বলা হয়, পরিত্যক্ত বাড়ির তালিকা থেকে ভবনটি অবমুক্ত না হওয়ার পরও কীভাবে রাজউক চেয়ারম্যানের দপ্তর থেকে সেটির নামজারি ও দলিল করার অনুমতি দেয়া হলো সে বিষয়ে ব্যাখ্যা দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু রাজউক চেয়ারম্যান সেই ব্যাখ্যা প্রদানে অনীহা দেখিয়েছেন। রিটের পর ২০২২ সালের ১ নভেম্বর আদালত রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে বাড়িটি বেআইনিভাবে দখলে রাখার অভিযোগে আবদুস সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্টদের নিষ্ক্রিয়তা কেন আইনগত কতৃত্ব বহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না-তা জানতে চাওয়া হয়। সেই সঙ্গে বাড়ি সংক্রান্ত নথিপত্র হলফনামা আকারে দাখিল করতে বলেন। পাশাপাশি আদেশ ও কোর্টের কার্যক্রম ছাড়া এ মামলার বিষয়বস্ত নিয়ে কোনো প্রকার প্রচার-প্রচারণা না করতে উভয়পক্ষকে নির্দেশ দেয়া হয়।
চলতি বছরের ৮ ফেব্রুয়ারি শুনানিতে দুদকের আইনজীবী আদালতে জানান, আদালতের নির্দেশের পর বাড়িটি নিয়ে দুদক অনুসন্ধান করে। অনুসন্ধানে বাড়িটির বিষয়ে জাল-জালিয়াতি ও প্রতারণার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়। মৌখিক ও দালিলিক সাক্ষীর ভিত্তিতে দুদক সর্বসম্মতিতে সিদ্ধান্ত নিয়ে যাদের বিরুদ্ধে প্রাথমিকভাবে অভিযোগ পেয়েছে তাদের বিরুদ্ধে ৫ ফেব্রুয়ারি মামলা করেছে। এখন মামলাটি তদন্তাধীন । পরে এ সংক্রান্ত রুলের ওপর ৩ মার্চ শুনানি শেষে আদালত রায়ের জন্য তারিখ ধার্য করেন।



  
  সর্বশেষ
সংগীত শিল্পীর মাদকের কারবার!
সেই শিশু পর্নোগ্রাফার টিপু এবার ডিবির জালে
সাবেক আইজি বেনজীরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে রিট
সারাদেশে গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুরা ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট

প্রধান সম্পাদক: এনায়েত ফেরদৌস , অনলাইন সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত ) কামরুজ্জামান মিল্টন |
নির্বাহী সম্পাদক: এস এম আবুল হাসান
সম্পাদক জাকির হোসেন কর্তৃক ২ আরকে মিশন রোড ঢাকা ১২০৩ থেকে প্রকাশিত ও বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল ঢাকা ১০০০ থেকে মুদ্রিত। সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ২/২, ইডেন কমপ্লেক্স (৪র্থ তলা) সার্কুলার রোড, ঢাকা ১০০০। ফোন: ০১৭২৭২০৮১৩৮, ০১৪০২০৩৮১৮৭ , ০১৫৫৮০১১২৭৫, ই-মেইল:bortomandin@gmail.com