|
বাইডেনের সাথে সেলফি ও মাখোঁ`র ঢাকা সফর নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমা চাপ কতটা কমাবে? -বিবিসি বাংলা |
|
|
|
|
|
অনলাইন ডেস্ক
ভারতে জি২০ সম্মেলনের সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সেলফি বাংলাদেশের রাজনীতিতে নানা নতুন আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ ঘটনার দু`দিন পরেই ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ ঢাকা সফর করলেন। সেলফিতে শেখ হাসিনার সাথে জো বাইডেনের হাস্যোজ্জ্বল ছবিকে `সম্পর্ক উন্নয়নের` বার্তা হিসেবে দেখেন কেউ কেউ। একটি সম্মেলনে অনানুষ্ঠানিক সাক্ষাত ও ছবি তোলা আদৌ বাংলাদেশের আগামী নির্বাচনকে ঘিরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত বহন করে কী-না সে প্রশ্নও তুলছেন অনেকে। বিবিসি বাংলায় প্রতিবেদনটি লিখেছেন আবুল কালাম আজাদ। ইনকিলাব পাঠকদের জন্য এটি হুবহু তুলে ধরা হলো। নির্বাচনের আগে ভারতে আলোচিত হাসিনা-বাইডেন সেলফি আর এক সপ্তাহের মধ্যেই দুই পরাশক্তি রাশিয়া ও ফ্রান্সের উচ্চ পর্যায়ের সফর দু`টিকেও বাংলাদেশের রাজনীতির আলোচনায় গুরুত্ব পাচ্ছে। বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আন্তর্জাতিক সমর্থনের প্রশ্নে এ বিষয়গুলিকে গুরুত্বের সাথে সামনে আনছে ক্ষমতাসীন দল। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব-উল-আলম হানিফ মনে করছেন, এগুলো বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের প্রতি বিশ্ব সম্প্রদায়ের ইতিবাচক অবস্থান হিসেবেই দেখছেন। “সব মিলিয়ে একটা ইতিবাচক ধারণা বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটা হচ্ছে আমাদের সফলতার জায়গা," বিবিসি বাংলাকে বলেন হানিফ। হানিফ বলেন, বহির্বিশ্বে বাংলাদেশ সম্পর্কে কিছুটা হলেও একটা ভুল বোঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছিল। এজন্য তিনি বিএনপি এবং জামায়াতে ইসলামের তৎপরতাকে দায়ী করেন। তার বক্তব্য হচ্ছে, লবিস্ট নিয়োগের মাধ্যমে সরকার বিরোধীরা বর্তমান সরকারের `উন্নয়ন ও অগ্রগতির বিরুদ্ধে প্রচারণা` চালিয়েছে। তবে বাংলাদেশ সম্পর্কে বহির্বিশ্বে `ভুল ধারণা কেটে যাচ্ছে` বলে মনে করেন হানিফ। নির্বাচনকে সামনে রেখে বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন ও বিরোধী দলের মধ্যে এখন পাল্টাপাল্টি কঠোর অবস্থান স্পষ্ট। রাজপথে কর্মসূচির বাইরে দুই দলকেই নিজেদের পক্ষে আন্তর্জাতিক সমর্থন আদায় ও সেটি প্রচারে জোর তৎপরতা চালাতেও দেখা যাচ্ছে। সরকারের পদত্যাগ ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের জন্য বিরোধী দল বিএনপি আন্দোলন করছে। কয়েকমাস আগে আমেরিকার পক্ষ থেকে ভিসানীতি ঘোষণাসহ যেসব পদক্ষেপের কথা বলা হচ্ছে, বিএনপি সেটিকে স্বাগত জানাচ্ছে। শেখ হাসিনার সাথে জো বাইডেনের সেলফিকে `সাধারণ সৌজন্যতা` হিসেবেই দেখে বিএনপি। এ ধরণের সেলফি আমেরিকার নীতি পরিবর্তনে কোনো ভূমিকা রাখবে না বলেও দলটি বিশ্বাস করে। “আমেরিকার তো একটা নীতি আছে। সেই নীতি তারা প্রণয়ন করে, সেই নীতি প্রণয়নের আগে তারা অনেক কিছু ভেবে চিন্তে প্রণয়ন করে। এটা আমার মনে হয় না কোনো সেলফি বা বাইডেন সাহেবের কথায় বদল হবে,” বিবিসি বাংলাকে বলেন বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু। “হ্যাঁ বাইডেন সাহেবের একটা ইনফ্লুয়েন্স আছে। কিন্তু বাইডেন সাহেব বা প্রেসিডেন্ট অফ দ্য ইউনাইটেড স্টেটস ওই রকম কোনো কথা বলবে না, ওই রকম কোনো কাজ করবে না যে নীতি বদলে যাবে। এটা কি বাংলাদেশ নাকি যে একজনের কথায় সব চলে?” সেলফি কি কাজে দেবে? যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলো এবার একটি সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য বাংলাদেশ সরকারকে চাপ দিয়ে যাচ্ছে। ভারতে জি২০ সম্মেলনে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিশ্বনেতাদের সঙ্গে আন্তরিকতার ছবি কি সেই অবস্থান পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত বহন করে? যুক্তরাষ্ট্রের ইলিনয় স্টেট ইউনিভার্সিটির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ডিস্টিংগুইশড প্রফেসর আলী রীয়াজ পরিবর্তনের কোনো ইঙ্গিত দেখছেন না। অধ্যাপক রিয়াজ বলেন, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের সাথে আমেরিকার টানাপোড়েন তৈরি হয়েছে মানবাধিকার পরিস্থিতি ও সুষ্ঠু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে। যুক্তরাষ্ট্র বারবার অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য তাগিদ দিচ্ছে। "কোনো পরিবর্তন এখন পর্যন্ত ঘটেনি, ঘটবার মতো কোনো রকম ইঙ্গিত বা লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না,” বলেন অধ্যাপক রিয়াজ। ফরাসি ও রুশ দ্বিপাক্ষিক সফর ভারতে জি২০ সম্মেলনের আগে পরে ঢাকা সফর করেছেন রাশিয়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। সাধারণত একটি সরকারের মেয়াদের শেষ সময়ে এই ধরনের উচ্চ পর্যায়ের সফর গতানুগতিক ধারার বাইরে। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের দ্বিপাক্ষিক সফরে বাংলাদেশ বিমানের জন্য ১০টি উড়োজাহাজ কেনা এবং ২য় স্যাটেলাইট নির্মাণ ফ্রান্সের কোম্পানির সহযোগিতা নেয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে। অন্যদিকে রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সফরে সর্বস্তরে দু`দেশের সম্পর্ক বাড়ানো এবং ডলারের বিকল্প মূদ্রা ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা হয়েছে। উচ্চ পর্যায়ের এসব সফরের পেছনে এখন বাণিজ্যিক স্বার্থ বেশি জড়িত বলেই মনে করেন অধ্যাপক আলী রিয়াজ। তার বিশ্লেষণ হচ্ছে, রাশিয়া মিত্র বাড়ানোর চেষ্টা করছে। বাংলাদেশকে তারা মিত্র হিসেবে বিবেচনা করছে। কারণ, রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুত প্রকল্প নিয়ে রাশিয়ার বড় বাণিজ্যিক স্বার্থ আছে বাংলাদেশে। “প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রোঁর সফরটা মূলত একটা বাণিজ্যিক সফর। যেহেতু এই মুহূর্তে বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনরা এক ধরনের দুর্বল অবস্থানের মধ্যে আছেন চাপের মধ্যে আছে। এই সুযোগ গ্রহণ করে যতটা পারে আন্তর্জাতিক শক্তিগুলো বাণিজ্যিক সুবিধা নেয়ার চেষ্টা করবে,” বলেন অধ্যাপক রিয়াজ।
|
|
|
|
|
|
|
|
প্রধান সম্পাদক: মতিউর রহমান
, সম্পাদক: জাকির হোসেন, নির্বাহী সম্পাদক এসএম আবুল হাসান। সম্পাদক কর্তৃক ২ আরকে মিশন রোড, ঢাকা ১২০৩ থেকে প্রকাশিত এবং বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২০১৯ ফকিরাপুল , ঢাকা ১০০০ থেকে মুদ্রিত। বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: জামান টাওয়ার (৪র্থ তলা) ৩৭/২ পুরাণা পল্টন, ঢাকা ১০০০
ফোন: ০১৫৫৮০১১২৭৫, ০১৭১১১৪৫৮৯৮, ০১৭২৭২০৮১৩৮। ই-মেইল: bortomandin@gmail.com, ওয়েবসাইট: bortomandin.com
|
|
|
|