শনিবার, এপ্রিল ২৭, ২০২৪
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
|
শিরোনাম : * সেই শিশু পর্নোগ্রাফার টিপু এবার ডিবির জালে   * ৪ মে থেকে শনিবারও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা   * সাবেক আইজি বেনজীরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে রিট   * গত ১৫ বছরে দেশের বিস্ময়কর উন্নয়ন হয়েছে : ওবায়দুল কাদের   * গাজা উপত্যকায় এক গণকবরেই ৩০০ লাশ   * মিয়ানমার নৌবাহিনীর এলোপাতাড়ি গুলি, ২ বাংলাদেশি গুলিবিদ্ধ   * খিলগাঁয়ে ট্রেন দূর্ঘটনায় অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ   * বোটক্লাব কান্ডে পরীমণির বাট খাচ্ছে !   * মালিকদের লুটপাটে বেসরকারি অনেক ব্যাংক ধ্বংসের মুখে   * গুলশানের বারের সামনে হাতাহাতিতে তিন নারী গ্রেফতার  

   অপরাধ-দূর্নীতি
র‌্যাবের এখতিয়ারে প্রশ্ন হাইকোর্টের
  Date : 29-03-2023
Share Button



নিজস্ব প্রতিবেদক
কোনো মামলা ছাড়াই নওগাঁর সুলতানা জেসমিনকে র‌্যাবের হেফাজতে নেওয়া থেকে শুরু করে হাসপাতালে নেওয়ার আগ পর্যন্ত যে প্রক্রিয়া চালানো হয়েছে, তা আইনগতভাবে কতটুকু সঠিক ছিল জানতে চেয়েছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায়ও কাউকে গ্রেপ্তারের এখতিয়ার র‌্যাবের রয়েছে কি না, তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত চেয়ে করা এক রিটের শুনানিকালে গতকাল মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের বেঞ্চ রাষ্ট্রপক্ষের কাছে এসব প্রশ্নের জবাব চান।আদালত বলেছেন, আটকের পর সুলতানা জেসমিনকে সম্মানজনক জায়গায় (থানা অথবা কার্যালয়ে) নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছিল কি না এবং হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার আগ পর্যন্ত সময়ের ব্যবহার আইনানুগ হয়েছে কি না। পুরো প্রক্রিয়া আইনগতভাবে হয়েছে কি না এবং তাকে একটা অভিযোগের ভিত্তিতে তুলে নেওয়া র‌্যাবের জুরিসডিকশনে (এখতিয়ার) ছিল কি না? রাষ্ট্রপক্ষকে আগামী বুধবারের মধ্যে এসব প্রশ্নের জবাব দাখিল করতে বলেছেন। একই সঙ্গে ওইদিন বেলা ২টায় এ ব্যাপারে পরবর্তী শুনানির জন্য ধার্য করেছেন। এর আগে র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুসংক্রান্ত প্রকাশিত খবর গত সোমবার আদালতের নজরে নিয়ে স্বতঃপ্রণোদিত আদেশ চেয়েছিলেন আইনজীবী মনোজ কুমার ভৌমিক। বিষয়টিতে শুনানির পর হেফাজতে ওই নারীর মৃত্যুর ঘটনায় কোনো মামলা হয়েছে কি না এবং মৃত্যুর কারণ জানতে সুরতহাল ও ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন দেখতে চান আদালত। সুলতানা জেসমিনকে আটকের কারণ, স্থান, সময়, হেফাজতে নেওয়ার কারণ, জিজ্ঞাসাবাদ সুনির্দিষ্ট তথ্যও চান আদালত। আর এসব তথ্য জানাতে রাষ্ট্রপক্ষকে এক দিনের সময় দেওয়া হয়। আদালতের দৃষ্টিতে আনা ওই আইনজীবীকে বলা হয়, রিট আবেদন নিয়ে আসতে। নির্দেশ মতো গতকাল মঙ্গলবার আদালতে প্রতিবেদন দেয় রাষ্ট্রপক্ষ। সেখানে ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন ছিল না। অন্যদিকে র‌্যাব হেফাজতে সুলতানা জেসমিনের মৃত্যুর কারণ ও র‌্যাবের কর্মকা- খতিয়ে দেখতে একটি উচ্চপর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করেন ওই আইনজীবী। গতকাল বেলা আড়াইটায় এ রিটের শুনানি শুরু হয়। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ। আবেদনের আরজি তুলে ধরে রিটকারী মনোজ কুমার বলেন, ‘এ ঘটনায় কোনো বিষয়ও বিচ্ছিন্নভাবে দেখার সুযোগ নেই। র‌্যাব গঠন করা হয়েছিল দাগি চোর-ডাকাত, মাদক চোরাকারবারি ধরতে। এই নারীকে (সুলতানা জেসমিনকে) আটক করা হয় ২২ মার্চ। আর ২৪ মার্চ তার মৃত্যুর কয়েক ঘণ্টা আগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। এই আইনে কাউকে গ্রেপ্তারের এখতিয়ার পুলিশের থাকলেও র‌্যাবের নেই। তা ছাড়া ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৭ ধারা অনুসারে সুলতানা জেসমিনকে আটকের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আদালতে হাজির করা হয়নি। মনোজ কুমার আরও বলেন, ‘কোনো অসৎ উদ্দেশ্য হাসিল করতেই র‌্যাব এ ধরনের বেআইনি ঘটনা ঘটিয়েছে। আমরা আজ অসহায়। র‌্যাব যাকে ইচ্ছা তাকে তুলে নিয়ে উধাও করে দিচ্ছে। এটি (সুলতানা জেসমিনকে আটক, হেফাজত, জিজ্ঞাসাবাদ) সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে করা হয়েছে। তা ছাড়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক সুলতানা জেসমিনের মাথায় আঘাত থাকার কথা বলেছেন, যা পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এসেছে। ফলে র‌্যাবের কর্মকা- ও নারীর মৃত্যুর কারণ উদঘাটনে নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন। যে কারণে হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত একজন বিচারপতির নেতৃত্বে একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে রিটে। এরপর শুনানিতে আসেন অ্যাটর্নি জেনারেল। নওগাঁ সদর হাসপাতালে চিকিৎসাসংক্রান্ত কাগজপত্র তুলে ধরে তিনি বলেন, সুলতানা জেসমিনের উচ্চ রক্তচাপ ছিল। সংশ্লিষ্ট কাগজপত্র তুলে ধরে রাষ্ট্রের প্রধান আইন কর্মকর্তা এএম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘এক ব্যক্তির অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ মার্চ ১১টা ৫০ মিনিটে নওগাঁ সদরের নওজোয়ান মাঠের সামনে থেকে ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৪ ধারা অনুসারে সুলতানা জেসমিনকে আটক করা হয়। পরে জনসাধারণের সামনে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে র‌্যাব। তার আগে আটক ওই নারীর মোবাইল ফোন থেকে অভিযোগসংক্রান্ত তথ্য ও নথি উদ্ধার করা হয়। ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় র‌্যাব ওই নারীকে আটকে রাখেনি দাবি করে আমিন উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশে সোপর্দ করতে থানায় নিয়ে যাওয়ার পথে আটক নারী অসুস্থ হয়ে পড়লে দুপুর সোয়া ১টায় প্রথমে তাকে নওগাঁ সদর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তখন তার রক্তচাপ ছিল ৯০/১৬০। এরপর ওই দিন রাত ৯টা ২০ মিনিটে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ভর্তিতে রক্তক্ষরণজনিত সমস্যার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। ফলে এটি সম্পূর্ণভাবে ভুল যে, ২৪ ঘণ্টার বেশি সময় ওই নারীকে হেফাজতে রাখা হয়েছে। শুনানির একপর্যায়ে আদালত বলেন, একজন নাগরিক জঘন্য অপরাধী হতে পারে। অত্যন্ত খারাপ কাজ করতে পারে। সে জন্য ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া (প্রসিডিউর) আছে। দিন শেষে আইনগত প্রক্রিয়া অনুযায়ী কারও বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। যখন র‌্যাব তাকে গ্রেপ্তার করল তখন পর্যন্ত তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা ছিল না। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের অধীনে পুলিশ আটক করলেও একটা কথা ছিল। আইনে তাদের ক্ষমতা আছে। কিন্তু র‌্যাবের কি ওই আইনে সে ক্ষমতা আছে। কথা হচ্ছে র‌্যাব তাকে উঠিয়ে নিয়েছে, এরপরই তাকে পুলিশে দেবে। কিন্তু এখানে সেটা দেখা যাচ্ছে না। তাকে উঠিয়ে নেওয়ার পর অন্তর্বর্তী সময়ে যেভাবে ঘটনা ঘটেছে আমাদের উদ্বেগটা সেখানে। পুরো প্রক্রিয়া আইনগতভাবে হয়েছে এবং র‌্যাবের কি জুরিসডিকশন (এখতিয়ার) ছিল? আদালত আরও বলেন, সবার মনে প্রশ্ন। কারণ এটা বড় করে পত্রিকায় ছাপা হয়েছে। সবার ধারণা তাকে র‌্যাবের হেফাজতে নির্যাতন করা হয়েছে। এটা একটা হাইপোথিটিক্যাল (অনুমানিক) বিষয়। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেলে এএম আমিন উদ্দিন বলেন, আগে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট আসুক। তারপর এটা বোঝা যাবে। আদালত বলেন, সবার মনে যে প্রশ্ন, তাকে নির্যাতন করা হয়েছে নাকি অন্য কিছু এটা পরিষ্কার করতে হবে। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, কেউ যদি ব্যক্তিগতভাবে কোনো অপরাধ করে, তাহলে তার দায় রাষ্ট্র নেবে না। আদালত এ সময় বলেন, কেউ যেন এ ঘটনায় ভিকটিম না হয়। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা হয় সেটাই আমাদের প্রত্যাশা। এই মহিলা একজন সরকারি কর্মচারী। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতকে বলেন, তাকে আটকের পরই তার মোবাইলের কথোপকথনসহ যাবতীয় তথ্য প্রিন্ট আউট করা হয়েছে। টাকা যে পাঠানো হয়েছে, মোবাইলে তার ছবি রয়েছে, কথোপকথন প্রকাশ পেয়েছে। যখনই এগুলো প্রিন্ট আউট হয়েছে, তখনই তার প্রেসার বেড়ে গেছে। এ সময় আদালত বলেন, আমাদের প্রধান উদ্বেগ হচ্ছে, আইনগত প্রক্রিয়া। এর বাইরে অনুমাননির্ভর বিষয়ে যাব না। মামলা হবে কী হবে না, সেটা রাষ্ট্র ও ভুক্তভোগীর পরিবারের বিষয়। এ সময় অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, মামলা হবে কী হবে না, সেটা ময়নাতদন্ত রিপোর্ট এলে বোঝা যাবে। আর রিটকারীর যে মূল যুক্তি ২৪ ঘণ্টা। এই যুক্তি তো থাকছে না। তদন্ত করতে হলে তো যুক্তি থাকতে হবে। এ সময় রিটকারী মনোজ কুমার ভৌমিক বলেন, পুরো বিষয়টা কতটুকু আইনসঙ্গতভাবে হয়েছে নাকি হয়নি আমি সেটার তদন্ত চাই। আদালত বলেন, আমরা আইনি পয়েন্টে থাকতে চাই। কোনো মামলা ছাড়াই এভাবে তাকে উঠিয়ে নেওয়ার জুরিসডিকশন র‌্যাবের আছে কিনা? এখানে অ্যাটর্নি জেনারেল বলেছেন, র‌্যাবের আলাদা রেগুলেটরি আইন আছে। সেখানে কোনো ক্ষমতা আছে কিনা দেখতে হবে। এ ছাড়া তাকে সাড়ে ১০টায় উঠিয়ে নেওয়া হয় এবং সোয়া ১টায় হাসপাতালে ভর্তি করা হলো। হাসপাতালে নেওয়ার আগ পর্যন্ত র‌্যাবের হেফাজতে রাখার এখতিয়ার আছে কিনা, একজন মৌখিকভাবে অভিযোগ দিয়েছে, তার ভিত্তিতে তাকে উঠিয়ে নিতে পারে কিনা? র‌্যাব বলেছে, সে অপরাধ স্বীকার করেছে, তার কাছ থেকে কিছু ম্যাটেরিয়াল (উপাদান) সংগ্রহ করেছে- এগুলো করতে পারে কিনা? তার মাথায় আঘাতের বিষয়টি পত্রিকায় এসেছে। কিছু পত্রিকায় বলা হয়েছে, ২২ তারিখেই ব্রেইন হ্যামারেজ অবস্থায় তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। এখন তার ময়নাতদন্ত হয়েছে। রিপোর্ট আসতে সময় লাগবে। এ অবস্থায় তাকে তুলে নেওয়ার পুরো প্রক্রিয়া সঠিক ছিল কিনা। এর পেছনে আইনগত ভিত্তি, ময়নাতদন্ত রিপোর্টসহ তিনটি বিষয় দেখে আদালত পরবর্তী সিদ্ধান্ত দেওয়ার জন্য আগামী বুধবার বেলা ২টায় সময় নির্ধারণ করেন।



  
  সর্বশেষ
সেই শিশু পর্নোগ্রাফার টিপু এবার ডিবির জালে
সাবেক আইজি বেনজীরের দুর্নীতি অনুসন্ধানে রিট
সারাদেশে গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন ঢাকায় সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে অসুস্থ, বয়স্ক ও শিশুরা ৩ দিনের হিট অ্যালার্ট
বোটক্লাব কান্ডে পরীমণির বাট খাচ্ছে !

প্রধান সম্পাদক: এনায়েত ফেরদৌস , অনলাইন সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত ) কামরুজ্জামান মিল্টন |
নির্বাহী সম্পাদক: এস এম আবুল হাসান
সম্পাদক জাকির হোসেন কর্তৃক ২ আরকে মিশন রোড ঢাকা ১২০৩ থেকে প্রকাশিত ও বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল ঢাকা ১০০০ থেকে মুদ্রিত। সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ২/২, ইডেন কমপ্লেক্স (৪র্থ তলা) সার্কুলার রোড, ঢাকা ১০০০। ফোন: ০১৭২৭২০৮১৩৮, ০১৪০২০৩৮১৮৭ , ০১৫৫৮০১১২৭৫, ই-মেইল:bortomandin@gmail.com