খুলনা ডেস্ক:
যুক্তরাজ্যে চার দিনের সরকারি সফরে রয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। সফরকালে লন্ডনে বসতে যাচ্ছেন একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে, যার অপরপক্ষ হচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে ১১টার মধ্যে, লন্ডনের সেন্ট্রাল এলাকায় অবস্থিত দ্য ডরচেস্টার হোটেলে।
দেশের রাজনীতিতে জাতীয় নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার মতো স্পর্শকাতর বিষয়ে যখন দ্বন্দ্ব তীব্র, তখন এই আলোচনাকে ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন আশাবাদ। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বৈঠক হতে পারে দেশের গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার পথে একটি সম্ভাব্য মোড় পরিবর্তনের সূচনা। অনেকের ধারণা, এটি শুধু একটি রাজনৈতিক বৈঠক নয়, বরং ভবিষ্যতের রাজনৈতিক রূপরেখা নির্ধারণের অন্যতম ক্ষেত্র হয়ে উঠতে পারে।
নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) আশা করছে, শুধু নির্বাচন নয়, বরং রাষ্ট্রব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কার, ‘জুলাই চেতনা’ বাস্তবায়ন এবং প্রজন্মের চাহিদা নিয়ে ঐকমত্য তৈরির বিষয়টিও আলোচনায় উঠে আসবে। দলটির যুগ্ম সদস্যসচিব সালেহ উদ্দিন সিফাত মনে করেন, সহিংসতা পরিহার করে প্রগতিশীল ও অংশগ্রহণমূলক রাজনীতির দিকেই এগিয়ে যেতে হবে।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আলোচনায় জাতীয় নির্বাচনের সময় নির্ধারণ, সরকারের নিরপেক্ষতা ও আইনের শাসনের প্রশ্নগুলো অগ্রাধিকার পাবে। তাঁর মতে, এই বিষয়গুলোতে সংলাপ ছাড়া কোনো অগ্রগতি সম্ভব নয়।
নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না মনে করেন, দুই পক্ষ যদি উদারতা ও বাস্তবতাকে গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করেন, তবে দেশের রাজনীতিতে ইতিবাচক পরিবর্তনের সুযোগ তৈরি হতে পারে।
এবি পার্টির চেয়ারম্যান মজিবুর রহমান মঞ্জুর মতে, রাজনৈতিক সমঝোতা অর্জনের জন্য বিএনপিকে কিছু ত্যাগ স্বীকার করতে হতে পারে। আবার সরকারেরও উচিত নমনীয়তা দেখানো, বিশেষ করে নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে। উভয়পক্ষের সহনশীলতা ও দায়িত্বশীলতা এই আলোচনার সফলতা নির্ধারণ করবে বলে মনে করছেন তিনি।
এই আলোচনাকে ঘিরে সাধারণ মানুষের মধ্যেও একটা স্বস্তি ও প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে—একটি সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ খুঁজে পাওয়ার আশায়।