খুলনা ডেস্ক:
দৈনিক আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান বলেছেন, মাত্র ৯ মাস আগের শহীদদের স্মৃতি আমরা ভুলতে বসেছি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাঁর মতে, জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে দেশে যে ফ্যাসিবাদবিরোধী আন্দোলনের সূচনা হয়েছিল, তা আজ নানা বিভক্তি ও রাজনৈতিক ব্যর্থতায় ক্ষয়িষ্ণু হয়ে পড়েছে। খুলনা প্রেসক্লাবের ব্যাংকুয়েট হলে অনুষ্ঠিত আমার দেশ-এর খুলনা ও বরিশাল বিভাগের প্রতিনিধি সম্মেলনে এ কথা বলেন তিনি।
তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে ফ্যাসিস্ট সরকার ও ভারতের সাম্রাজ্যবাদ আমাদের ওপর যে দমন-পীড়ন চালিয়েছে, তা থেকে মুক্তির পথ দেখিয়েছিলেন জুলাই বিপ্লবের শহীদরা। কিন্তু মাত্র কয়েক মাসেই সেই ঐক্য দুর্বল হয়ে পড়েছে। ভারতের আধিপত্য আবারও বাংলাদেশের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ খুঁজছে, আর তার দায় কিছুটা রাজনৈতিক দলগুলোর ব্যর্থতার কারণেও সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, রাজনৈতিক অস্থিরতার ফলে সংবাদপত্রের দায়িত্ব আরও বেড়ে গেছে। সঠিক ও নিরপেক্ষ সংবাদ পরিবেশনের মাধ্যমে জনগণের পক্ষে দাঁড়াতে হবে সাংবাদিকদের। “আমি বাংলাদেশের পক্ষে, জনগণের পক্ষে এবং ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে রাজনীতি করি”—এই বক্তব্যের মাধ্যমে তিনি তাঁর অবস্থান পরিষ্কার করেন।
প্রতিনিধি সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন আমার দেশ পত্রিকার পরিচালক শাকিল ওয়াহেদ সুমন, নির্বাহী সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ এবং সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এম আবদুল্লাহ। স্বাগত বক্তব্য দেন মফস্বল সম্পাদক আবু দারদা যোবায়ের। সঞ্চালনা করেন খুলনা ব্যুরো প্রধান এহতেশামুল হক শাওন। বক্তব্য রাখেন বরিশাল অফিসের নিকুঞ্জ বালা পলাশ ও যশোর অফিসের আহসান কবীর।
মাহমুদুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ১১ বছর বন্ধ থাকার পর আমার দেশ পত্রিকা পুনরায় চালু করা একটি বড় চ্যালেঞ্জ ছিল, যা আমরা সফলভাবে মোকাবিলা করেছি। এখন পত্রিকাটি নিজস্ব প্রেস থেকে ছাপানো হচ্ছে। তিনি উল্লেখ করেন, সাংবাদিকদের নিজস্ব রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকতেই পারে, তবে সাংবাদিকতা করতে হবে বস্তুনিষ্ঠভাবে। পাঠক রাজনৈতিক সংবাদে আগ্রহী, তাই তা পরিবেশনেও থাকতে হবে সততা ও দায়িত্ববোধ।
তিনি বলেন, আমার দেশ পত্রিকার কর্মীরা লড়াই করেছেন, জেল খেটেছেন এবং চরম নিপীড়নের মধ্যেও এ পত্রিকাকে একটি ব্র্যান্ডে পরিণত করেছেন। কোনো রাজনৈতিক দল বা ব্যক্তি এই ব্র্যান্ড তৈরি করে দেয়নি, বরং দলগুলো এই পত্রিকার কাছে ঋণী হওয়া উচিত।
আলোচনার শুরুতেই মাহমুদুর রহমান জুলাই বিপ্লবের শহীদদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা জানান।