খুলনা ডেস্ক:
নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নের কুমারডাঙ্গা গ্রামে খাজা মোল্যা হত্যা মামলার পর থেকেই আসামিপক্ষের বাড়িঘরে দফায় দফায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও লুটপাটের অভিযোগ উঠেছে। নিহত খাজা মোল্যার পরিবারের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী আসামিপক্ষের সদস্যরা। গত এক সপ্তাহে অন্তত ৪০টি বাড়িতে হামলা হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে। ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ নানা তালবাহানা করছে এবং মামলা নিতে অস্বীকৃতি জানাচ্ছে।
ক্ষতিগ্রস্তদের একজন ফারজানা ববি জানান, তাঁর মেয়ের চিকিৎসার জন্য ঘরে রাখা পাঁচ লাখ টাকা, বিশ ভরি স্বর্ণালংকার এবং বাড়িতে থাকা ১৩টি গরু লুট করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের ঘরে আগুন দিয়ে শত মণ পাট ও ধানসহ দুটি আমগাছও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে। এমনকি তাঁর ছেলেকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়েছে বলে তিনি দাবি করেন।
অন্যদিকে পলাশ শেখের স্ত্রী সাবিনা ইসলাম বন্যা বলেন, তাঁর স্বামী সামাজিক কাজকর্মে যুক্ত ছিলেন এবং অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের বিরোধিতা করতেন বলেই ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁকে হত্যা মামলায় আসামি করা হয়েছে। তিনি জানান, তাঁদের ঘরবাড়িতেও হামলা চালানো হয়েছে, টিন কেটে নেওয়া হয়েছে এবং মালামাল ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। এখন পরিবারের সদস্যরা আতঙ্কে ঘরছাড়া, সন্তানদের শিক্ষা কার্যক্রমও বন্ধ হয়ে গেছে।
বৃদ্ধা মেহেরুন্নেসা জানান, তাঁর ঘরবাড়ি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, মাছের ঘের, স্বর্ণালংকার, নগদ টাকা এবং গরু লুট করে নেওয়া হয়েছে। এমনকি তাঁর পুত্রবধূ ও ছেলেকে ঘরে আটকে পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করা হয়েছিল বলে তিনি অভিযোগ করেন।
স্থানীয় আরও কয়েকজনের বাড়িতে হামলা, শস্য লুট, গরু চুরি এবং শারীরিক নিপীড়নের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শহীদ শেখ, শাহীন শেখ ও মিলন মোল্যার বাড়িতেও হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে।
তবে নিহত খাজা মোল্যার ভাই এবং মামলার বাদী আলী হায়দার মোল্যা দাবি করেছেন, তাঁদের কেউ এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন এবং এসব অভিযোগ ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাঁদের পরিবারকে ফাঁসানোর উদ্দেশ্যে করা হচ্ছে।
লোহাগড়া থানার উপপরিদর্শক মো. আজিজুর তালুকদার জানান, খাজা মোল্যা হত্যা মামলার তদন্ত চলছে এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পুলিশ সম্ভাব্য অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে তৎপর রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৪ মে সকালে কুমারডাঙ্গা বাজারে চায়ের দোকানের সামনে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের হামলায় নিহত হন খাজা মোল্যা। হত্যাকাণ্ডের পর থেকে এলাকা জুড়ে চলছে চরম উত্তেজনা, পাল্টাপাল্টি অভিযোগ এবং নিরাপত্তাহীনতা।