|
এ কেমন চিকিৎসক বা শিক্ষক,নাকি সন্ত্রাসী |
|
|
|
|
|
ডেস্ক রিপোর্ট
সিরাজগঞ্জের শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজে সোমবার বিকেলে শিক্ষার্থীদের ভাইভা নিচ্ছিলেন শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ । এ সময় আমার একটি পোষা পাখি আছে বলে ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করেন। এরপর সেটি দেখিয়ে বলেন, এটাই আমার পোষা পাখি। নড়াচড়া করতেই এক পর্যায়ে সেটি থেকে গুলি বের হয়ে তমালের পায়ে লাগে। শিক্ষার্থী লাবিবার কানের পাশ দিয়ে যায় আরেকটি গুলি। শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজের কমিউনিটি মেডিসিন বিভাগের শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফ ‘উগ্র মস্তিষ্কের মানুষ’ উল্লেখ করে এভাবেই গতকাল শ্রেণিকক্ষে ঘটে যাওয়া ঘটনার বর্ণনা দিচ্ছিলেন শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনার পর অভিযুক্ত শিক্ষক রায়হান শরিফকে আটক করেছে পুলিশ। এসময় পিস্তলটিও উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর তিনি পুলিশকে বলেছেন, গত রোববার তিনি শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ডেকেছিলেন। কিন্ত শিক্ষার্থীরা তার নির্দেশমতো ক্লাসে উপস্থিত হননি। গতকাল মৌখিক পরীক্ষা চলার সময় কয়েকজন শিক্ষার্থীর কাছে ক্লাসে অনুপস্থিতির বিষয়ে কৈফিয়ত চান তিনি। এ বিষয়ে গুলিবিদ্ধ তমাল বলেন, গতকাল রুটিনে কোনো ক্লাস ছিল না। তারপরও রায়হান স্যার ক্লাস নেবেন বলেছিলেন। তবে আমরা ক্লাস করিনি। আজ ভাইভা চলাকালে তিনি আমাদের ক্লাস না করার কারণ জানতে চান। এ নিয়ে স্যারের সঙ্গে আমাদের কথা-কাটাকাটি হয়। এ সময় শিক্ষার্থীদের ওপর ক্ষুব্ধ হন রায়হান শরীফ। তিনি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, তোমাদের কারও কি পোষা পাখি আছে? আমার পোষা পাখি আছে। এই বলে তিনি সঙ্গে থাকা কালো ব্যাগ থেকে পিস্তল বের করে শিক্ষার্থীদের বলেন, এটা আমার পোষা পাখি। এরপর গুলি করেন। গুলি শিক্ষার্থী আরাফাত আমিনের ডান ঊরুতে লাগে। শিক্ষার্থীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন, ছাত্রীদের উত্ত্যক্ত করা, অস্ত্র নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে প্রবেশসহ নানা অভিযোগ রয়েছে শিক্ষক ডা. রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে বারবার অভিযোগ এবং তাকে বদলির চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছে কলেজ প্রশাসন। কলেজের শিক্ষার্থী সাদিয়া ও লাবিবা বলেন, শিক্ষক রায়হান শরীফ ছাত্রীদেরও উত্ত্যক্ত করতেন। আপত্তিকর ইশারা করতেন। ভয়ভীতিও দেখাতেন। কলেজ ক্যাম্পাসে অস্ত্র নিয়ে প্রবেশ করেন তিনি। এসব বিষয়ে কলেজ কর্তৃপক্ষকে জানালেও তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ডা. রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেন তার সহকর্মী শিক্ষকরাও। কলেজের ফরেনসিক ও মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আব্দুল্লাহ হিল কাফিসহ একাধিক শিক্ষক বলেন, রায়হান শরীফ এর আগেও কলেজে পিস্তল নিয়ে এসেছিলেন। বিষয়টি নজরে আসার পর তাকে সতর্ক করায় তিনি উল্টো ভয় দেখিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন ও হোস্টেলে গিয়ে শিক্ষার্থীদের মাদক গ্রহণের আহ্বানেরও অভিযোগ রয়েছে। কলেজের অধ্যক্ষ বলেন, ওই শিক্ষক এক ধরনের সাইকো। তার মেজাজ সবসময় চড়া থাকে। মাঝেমধ্যেই শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার খারাপ আচরণের অভিযোগ পাওয়া যায়। একাধিকবার তিনি কলেজ ক্যাম্পাসে পিস্তল নিয়ে ঢুকেছেন। শিক্ষার্থীরা প্রায়ই তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দেয়। তাকে বদলির জন্য কয়েক দফায় চেষ্টা করেছি। অধিদপ্তরে চিঠি দিয়েও বদলি করাতে পারিনি। শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ছাত্রকে গুলি করার ঘটনায় ডা. রায়হান শরীফের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। তিনি কীভাবে কলেজ ক্যাম্পাসে পিস্তল নিয়ে ঢুকলেন বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হবে। সদর থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, রায়হান শরীফের কাছ থেকে ৭.৫ বোরের একটি পিস্তল জব্দ করা হয়েছে। সেটির কোনো লাইসেন্স নেই। রায়হানকে আটকের পর জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মন্ডল বলেন, তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে এক ছাত্রের পায়ে গুলি করেন শিক্ষক। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের নামে মামলা হয়েছে।
|
|
|
|
|
|
|
|
প্রধান সম্পাদক: এনায়েত ফেরদৌস
, অনলাইন সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত ) কামরুজ্জামান মিল্টন
|
নির্বাহী সম্পাদক: এস এম আবুল হাসান
সম্পাদক জাকির হোসেন কর্তৃক ২ আরকে
মিশন রোড ঢাকা ১২০৩ থেকে প্রকাশিত ও বিসমিল্লাহ প্রিন্টিং প্রেস ২১৯ ফকিরাপুল, মতিঝিল ঢাকা ১০০০ থেকে মুদ্রিত।
সম্পাদকীয়, বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : ২/২, ইডেন কমপ্লেক্স (৪র্থ তলা) সার্কুলার রোড, ঢাকা ১০০০।
ফোন: ০১৭২৭২০৮১৩৮,
০১৪০২০৩৮১৮৭
,
০১৫৫৮০১১২৭৫, ই-মেইল:bortomandin@gmail.com
|
|
|
|