স্বপন কুমার সিং :
বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্যপ্রযুক্তি খাতে উদ্ভাবনী অবদান রাখায় আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন বিশিষ্ট কৃষি উদ্যোক্তা আবদুল আউয়াল মিন্টু। তাঁকে ‘টপ অ্যাগ্রি-ফুড পাইওনিয়ার (টিএপি)–২০২৫’ পুরস্কারে ভূষিত করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ওয়ার্ল্ড ফুড প্রাইজ ফাউন্ডেশন (ডব্লিউএফপিএফ)।
গত বুধবার যুক্তরাষ্ট্রের আইওয়া অঙ্গরাজ্যের ডেস ময়েন্স শহরে অনুষ্ঠিত ‘বোরলগ ডায়ালগ’ সম্মেলনে এই সম্মাননা প্রদান করা হয়। ফাউন্ডেশনটি মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের সহযোগিতায় বৈশ্বিক খাদ্যব্যবস্থা ও কৃষি উদ্ভাবনের উৎকর্ষ সাধনে প্রতিবছর এই আয়োজন করে থাকে।
ফাউন্ডেশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, উদ্ভাবনী নেতৃত্ব ও টেকসই কৃষি উন্নয়নে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ এই পুরস্কার দেওয়া হয়। চলতি বছরের জুন মাসে প্রতিষ্ঠার ৩৯ বছর পূর্তিতে বিশ্বের ৩৯ জন শীর্ষ কৃষি উদ্ভাবক ও উদ্যোক্তার নাম ঘোষণা করা হয়; তাঁদের মধ্যে বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে মনোনীত হন আবদুল আউয়াল মিন্টু।
কৃষি ও খাদ্যব্যবস্থার মানোন্নয়ন, প্রযুক্তিনির্ভর কৃষি সম্প্রসারণ এবং স্থানীয় কৃষিপণ্যের বাজার সৃষ্টি—এই তিন ক্ষেত্রে তাঁর কাজকে বিশেষভাবে উল্লেখ করা হয় অনুষ্ঠানে। আবদুল আউয়াল মিন্টু দেশের সুপরিচিত লাল তীর সিড লিমিটেড ও লাল তীর লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট (বিডি) লিমিটেড–এর প্রতিষ্ঠাতা। ১৯৯৫ সালে প্রতিষ্ঠিত লাল তীর সিড এখন দেশের মোট বীজ চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশ সরবরাহ করছে এবং অন্যতম শীর্ষ বীজ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত। এ দুটি প্রতিষ্ঠানই মাল্টিমোড গ্রুপের অঙ্গসংস্থা।
২০১১ সালে তিনি লাল তীর লাইভস্টক ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড প্রতিষ্ঠা করেন, যার লক্ষ্য মাংস ও দুধ উৎপাদন বাড়ানো। প্রতিষ্ঠানটি জেনেটিকভাবে উন্নত ষাঁড় থেকে উচ্চমানের বীর্য উৎপাদন করে কৃত্রিম প্রজনন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। পাশাপাশি কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও মাঠপর্যায়ে জ্ঞান বিনিময়ের মাধ্যমে পশুপালনে উৎপাদনশীলতা বাড়াতে ভূমিকা রাখছে।
লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন ও কৃষি অর্থনীতি বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী আবদুল আউয়াল মিন্টু বাংলাদেশের কৃষি খাতে দীর্ঘদিন ধরে উদ্ভাবন, প্রযুক্তি ও গবেষণায় অবদান রেখে আসছেন। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা জোরদারে তাঁর কাজ এখন অনুকরণীয় উদাহরণ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
সম্মাননা প্রাপ্তির প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন,“এই অর্জন কেবল আমার নয়, বাংলাদেশের কৃষক, গবেষক ও তরুণ উদ্যোক্তাদের সম্মিলিত প্রয়াসের ফল। আমরা চাই বাংলাদেশের কৃষি আরও উদ্ভাবননির্ভর, টেকসই ও বৈশ্বিকভাবে প্রতিযোগিতামূলক হোক।”