অনলাইন ডেস্ক:
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ দরজায় কড়া নাড়ছে বাংলাদেশের। আগামীকাল ২২ নভেম্বর বাংলাদেশ সময় রাত আটটায় দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ক্যারিবীয়দের বিপক্ষে মাঠে নামবে মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন নতুন বাংলাদেশ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের নাম শুনলেই সবার চোখে ভেসে ওঠে বেশ কিছু ছবি। মুখে চলে আসে অনেকগুলো নাম। ক্রিকেটের একঝাঁক বড় তারকা-স্যার গ্যারফিল্ড সোবার্স, অ্যালভিন কালিচরন, রোহান কানহাই, ক্লাইভ লয়েড, ভিভিয়ান রিচার্ডস, গর্ডন গ্রিনিজ, ডেসমন্ড হেইন্স, মাইকেল হোল্ডিং, অ্যান্ডি রবার্টস, জোয়েল গার্নার, ম্যালকম মার্শাল, কার্টলি অ্যামব্রোস, ব্রায়ান লারা কিংবা ক্রিস গেইল।
সেই ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে বাংলাদেশের আছে মিশ্র স্মৃতি। দুইরকম অভিজ্ঞতা। আছে পাঁচদিন লড়াই করে টেস্ট জয়ের কৃতিত্ব। জিম্বাবুয়েকে বাদ দিয়ে সুপ্রতিষ্ঠিত ক্রিকেট শক্তিগুলোর মধ্যে দেশের বাইরে বাংলাদেশের প্রথম টেস্ট সিরিজ বিজয়ের অনন্য কৃতিত্বটাও এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে (২০০৯ সালে ২ টেস্টের সিরিজে ২-০ ব্যবধানে জয়)।
তবে তেঁতো অভিজ্ঞতাও আছে। বাংলাদেশের টেস্ট ক্রিকেটের দুই যুগের ইতিহাসে সবচেয়ে কম রানে অলআউট হওয়ার লজ্জাটাই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে।
আরও বড় কথা হলো, আগামীকাল শুক্রবার যে মাঠে (অ্যান্টিগার স্যার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়াম) ওয়েস্ট ইন্ডিজের সাথে প্রথম টেস্ট খেলতে মাঠে নামবে মেহেদী হাসান মিরাজের বাংলাদেশ, সেই মাঠেই সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে মাত্র ৪৩ রানে অলআউট হয়েছিল টাইগাররা।
সেটা খুব বেশিদিন আগের কথা নয়। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে হিসেব করলে ৬ বছর ৪ মাস আগে। ২০১৮ সালের ৪ জুলাই অ্যান্টিগার ভিভিয়ান রিচার্ডস স্টেডিয়ামে এমন লজ্জায় পড়েছিল বাংলাদেশ।
মুশফিকুর রহিম, সে সিরিজের অধিনায়ক সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ এবং কামরুল ইসলাম রাব্বি ৪ জন আউট হন শূন্য রানে।
ক্যারিবীয় পেসার কেমার রোচ মাত্র ৮ রানে নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। বাংলাদেশের ব্যাটারদের মধ্যে লিটন দাস শুধু দুই অংকে পা রাখেন (৫৩ বলে ২৫)। বাকি ১০ ব্যাটারের কেউ ৬-এর বেশি করতে পারেননি। ওই ১০ জন মিলে করেছিলেন ১৮।
প্রথম ইনিংসে ৪৩ রানে অলআউট হওয়া বাংলাদেশ ম্যাচ হারে ইনিংস ও ২১৯ রানে। সেই দলের লিটন দাস, মুমিনুল হক আর মেহেদী হাসান মিরাজ আছেন এই দলে।
১৮ বছরের মধ্যে প্রথমবারের মত এ টেস্টে টাইগাররা খেলতে নামবে পঞ্চপাণ্ডবের কাউকে ছাড়া। এই ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে বোলিং করতে গিয়ে হাঁটু ও গোড়ালির ইনজুরির শিকারের পরপরই টেস্ট ক্যারিয়ার শেষ হয়ে গিয়েছিল মাশরাফি বিন মর্তুজার।
২০০৯ সালের সেই বিজয়ের মিশনেই অভিষেক হয়েছিল মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। এরপর সময়ের প্রবাহতায় ২০২১ সালে শেষ হয়েছে মাহমুদউল্লাহর টেস্ট ক্যারিয়ার। তামিম ইকবালও খেলছেন না ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে।
শুধু সাকিব আল হাসান আর মুশফিকুর রহিমই টেস্ট খেলা চালিয়ে যাচ্ছিলেন। সাকিব রাজনৈতিক নানা টানাপোড়েনে দলে অনিশ্চিত, এই সিরিজে খেলছেন না। ইনজুরির কারণে ওয়েস্ট ইন্ডিজে নেই মুশফিকুর রহিমও।
টাইগারদের সর্বনিম্ন টেস্ট ইনিংস যে ভেন্যুতে, সেখানে পঞ্চপাণ্ডবের কাউকে ছাড়া খেলতে নেমে কেমন করে নতুন অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজের নেতৃত্বাধীন দল, সেটাই এখন দেখার।